১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,দুপুর ২:০০

মেয়ের জিম্মায় রহিমা বেগম, অপহরণের অভিযোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২

  • শেয়ার করুন

সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমকে মেয়ে আদুরী বেগমের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৪ এর বিচারক সারওয়ার আহমেদ মামলার বাদি ও মেয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ছেড়ে দেন।

সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আদালত থেকে বেরিয়ে ইজিবাইকযোগে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা।
এর আগে রহিমা বেগম খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২ এর বিচারক মো: আলামিনের খাস কামরায় ২২ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

এ সময় বাদীপক্ষের আইনজীবী আফরুজ্জামান টুটুল বলেন, ‘ভিকটিম আদালতকে তাঁর অপহরণের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, জমিজমা নিয়ে যাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল, মূলত তারাই তাঁকে অপহরণ করে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে তিনি ফরিদপুরে আসেন। মামলায় যাদের নাম রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৪ / ৫ জন অপহরণের সঙ্গে জড়িত। জবানবন্দি প্রদান শেষে চিফ মেট্রোপলিটন আদালত-৪-এর বিচারক সারোয়ার আহমেদ তাঁকে তাঁর মেয়ে এজাহারকারী আদুরি খাতুনের জিম্মায় হস্তান্তর করেন।’

আইনজীবী বলেন, ‘জবানবন্দিতে অপহরণ করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন রহিমা। তাঁকে চারজন লোক উঠিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর কাছ থেকে জোর করে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর ১ হাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

আদালত থেকে বেরিয়ে রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, ‘আমার মাকে জীবিত ফিরে পেয়েছি। এই মুহূর্তে আমার চেয়ে সুখী আর কেউ নেই। ইনশাআল্লাহ আমার মায়ের হাত এক মুহূর্তের জন্যও আমি ছাড়ব না।’
তার আগে পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেন, নিজ বাসার নিচ থেকে ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত মুখে কাপড় বেঁধে তাকে অপহরণ করেছিল। উদ্ধার হওয়ার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে সন্তানদের মুখোমুখি করার পর তিনি মুখ খোলেন।

পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অব বাংলাদেশ (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে এ সকল তথ্য জানিয়ে বলেন, শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর থেকে তিনি কোনো কথাই বলছিলেন না। বেলা ১টার দিকে মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ তাকে চার মেয়ের মুখোমুখি আনা হয়। এসময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তিনি অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন কান্নারত অবস্থায় মেয়েরা মাকে বলতে থাকেন, আমাদের ছেড়ে আর কোনোদিন কোথাও যাবে না! আমাদের জমি দরকার নেই। মাকে দরকার, তোমাকে দরকার!

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, রহিমা বেগমকে অপহরণের পর অজ্ঞাতস্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি। জমি-জমার বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তাকে একহাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

রহিমা বেগমের দাবি, তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকছেদপুর হয়ে পূর্ব পরিচিত ভাড়াটিয়ার ফরিদপুরের বোয়ালখালী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তার কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।

পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, তারা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি ।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন