৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,রাত ১০:১৯

তীরে গিয়ে তরী ডুবলো টাইগ্রেসদের

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২২

  • শেয়ার করুন

পাকিস্তানকে হারানোর পর বিশ্বকাপের মঞ্চে ইতিহাস গড়ার আরেকটি সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ নারী দল। কিন্তু তা আর হলো না। তীরে এসেই ডুবল নিগার সুলতানাদের তরী। উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে মাত্র ৪ রানে হার মানল টাইগ্রেসরা।

শুক্রবার নতুন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নেমেই জাদুকরী বোলিং প্রদর্শনী করে বাংলাদেশের মেয়েরা। বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ১৪০ রানে বেধে ফেলে তারা। যাতে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিততে জ্যোতিদের করতে হত ১৪১ রান।

তবে ক্যারিবীয় বোলারদের ঘূর্ণিতে মাত্র ৪ রানে হেরে মাঠ ছাড়তে হয় নাহিদা-তৃষ্ণাদের। শেষ ওভারে প্রয়োজনীয় ৭ রানের ৩ রান নিতেই শেষ উইকেটটি হারায় বাংলাদেশ। ৪৯.৩ ওভারে থেমে যায় মাত্র ১৩৭ রানেই।

ক্যারিবীয় নারীদের পক্ষে হেইলে ম্যাথিউ একাই ধস নামান টাইগ্রেস ইনিংসে। ১০ ওভারে মাত্র ১৫টি রান দিয়ে একে একে তুলে নেন বাঘিনীদের ৪টি উইকেট। মূলত ম্যাচ সেরা এই স্পিনারের কাছেই হার মানে জ্যোতিরা।

এছাড়া স্টেফানি টেইলর ও আফাই ফ্লেচার দুজনেই ২৯ করে রান দিয়ে নেন ৩টি করে উইকেট। টাইগ্রেসদের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান আসে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও নাহিদা আক্তারের ব্যাট থেকে। এছাড়া ২৩ করে রান করেন সালমা খাতুন ও ফারজানা হক পিঙ্কি।

এদিন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা নাহিদা অবশ্য শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৪ বল খেলে। দলীয় ১২২ রানে ৯ম উইকেট পতনের পর তৃষ্ণাকে নিয়ে অনেকটা একাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে। কিন্তু সেটা আর হয়নি শেষ ওভারের চতুর্থ বলে তৃষ্ণা আউট হওয়াতে।

এছাড়া এদিন দলের টপ ও মিডল অর্ডারের চারজনই আউট হন শূন্য রানে। যা এমন পরাজয়ের অন্যতম কারণ।

এর আগে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। পাকিস্তানকে হারানোর ম্যাচের একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি বাংলাদেশ দল।

সেই ম্যাচের আত্মবিশ্বাস থেকেই আজকের ম্যাচে তারকাসমৃদ্ধ ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপকে শুরু থেকেই চাপে রাখে বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ডানহাতি পেসার জাহানারা আলমের বলে কট বিহাইন্ড হন ১৭ রান করা নারী ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার দেয়ান্দ্র ডটিন। পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে ১ উইকেটে মাত্র ৩৪ রান করতে পারে তারা। জাহানারার সঙ্গে দারুণ বোলিং করেন বাঁহাতি পেসার ফারিহা তৃষ্ণাও।

পরবর্তী ৩০ ওভারে ক্যারিবীয় ব্যাটারদের রীতিমতো নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন চার স্পিনার সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদ, নাহিদা আক্তার ও ফাহিমা খাতুন। এই ৩০ ওভারে মাত্র ৫৩ রান তুলতেই আরও ৬টি উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ৪০ ওভারে স্কোর দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৮৭ রান।

অবশ্য সপ্তম উইকেটের পতন ঘটেছিল দলীয় ৭০ রানের মাথায়। ক্যারিবীয় ইনিংসের ৩৬ ওভার শেষে সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ৭২ রান। সেখান থেকে শেষ ১৪ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৬৮ রান করে তারা। যা দলকে এনে দেয় বলার মতো সংগ্রহ।

নবম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ ৩৬ রান যোগ করেন কারিশমা রামহারাক ও শারমেইন ক্যাম্পবেল। এর আগে অ্যাফি ফ্লেচারকে নিয়ে অষ্টম উইকেটেও ৩২ রানের জুটি গড়েন ক্যাম্পবেল। কারিশমা ৭ ও অ্যাফি করেন ১৭ রান।

আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটিতে ১০৭ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন ক্যাম্পবেল। তার ব্যাটে ভর করেই হিলি ম্যাথুজ (১৮), রাশাদা উইলিয়ামস (৪), স্টেফানি টেলর (৪), চেডন ন্যাশনদের (৬) ব্যর্থতা ছাপিয়ে ওই পুঁজি পায় ক্যারিবীয়রা।

বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে ডানহাতি সালমা ও বাঁহাতি নাহিদা নিজেদের প্রথম ছয় ওভারে তিনটি করে মেডেন তুলে নেন, রান খরচ করেন সমান ১২ এবং উইকেটও নেন সমান ২টি করে। শুধু তাই নয়, শেষ পর্যন্ত। দুজনেরই বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ১০-৩-২৩-২!

এছাড়া জাহানারা, রুমানা ও রিতু মনি নিয়েছেন একটি করে উইকেট। ফারিহা (৬ ওভারে ২২) ও ফাহিমা (৮ ওভারে ১৯) উইকেট না পেলেও করেছেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। যার ফলে বিশ্বমঞ্চে আরেকটি ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায় নিগার সুলতানা বাহিনী।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন