২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,রাত ৪:০৬

সুন্দরবনের পাশে এবার নতুন ‘ম্যানগ্রোভ গ্রাম’

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

মোংলা প্রতিনিধি : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সুন্দরবনের পাশে এবার নতুন ‘ম্যানগ্রোভ গ্রাম’ সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে লবন সহিষ্ণু এলাকা বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার চিলা গ্রামে এই ম্যানগ্রোভ বনায়ন করছে উদ্যোগক্তারা।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগষ্ট) বেলা ১১ টায় জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির আওতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের উদ্যোগে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপের সদস্যদের মাঝে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ পদ্ধতি রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রপাতি, ম্যানগ্রোভ নার্সারি চাষিদের পরিবারকে নার্সারির সরঞ্জামাদি ও সুন্দরবন উপকূলীয় প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে ম্যানগ্রোভের কেওড়া, গোলপাতা, কদবেল, সফেদা ও নারিকেল গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এর আগে গত ২৮ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চার দিন ধরে তাদের ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দক্ষ করতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির প্রধান আবু সাদাত মনিরুজ্জামান খান জানান, এ উদ্যোগের আওতায় বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের প্রত্যেক গ্রামে গোলপাতা ও কেওড়া গাছ রোপন করা হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন- গোলপাতা গৃহনির্মাণ উপকরণ ও গৃহস্থালীয় আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গোলপাতা ফলের রস থেকে গুড় তৈরি করা যায়, যা ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। কেওড়ার আচার ও কেওড়ার পানি মুখরোচক খাবার। কেওড়া ফুলের মধুও বেশ উন্নতমানের। এসকল পণ্যের বাজারদর ও চাহিদা ব্যাপক।

তবে ম্যানগ্রোভ বনের বড় অবদানটি অন্য জায়গায়। এটি চলমান বৈশ্বিক ইস্যু জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সাহায্য করে। বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বৃদ্ধির ফলে ঘটছে জলবায়ু পরিবর্তন। আর এই কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষনের ক্ষমতা সাধারণ গাছের তুলনায় ম্যানগ্রোভ বনের গাছের ক্ষমতা চারগুণ বেশি। তাই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ম্যানগ্রোভ বনায়নকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদারসহ অন্যান্য অতিথীরা বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ম্যানগ্রোভ বনায়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে অঙ্গীকার করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং রাষ্ট্রীয় এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করছে ব্র্যাক। ব্যক্তি পর্যায়ে ম্যানগ্রোভ বনায়নে সুন্দরবন লাগোয়া এলাকায়ও আগে থেকেই কাজ করছে সংস্থাটি। তাই তাদেরকে সাধুবাদ জানায় তারা।

পাশাপাশি সুন্দরবনের আশেপাশের এলাকার বিভিন্ন জনপদের মানুষের সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আরো নানাভাবে কাজ করা ছাড়াও মোংলা উপজেলার মানুষের নিরাপদ পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে ২০১৯ সাল থেকে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হেসেন, সোনাইলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজরিনা বেগম, চিলা ইউনিয়ন আ’ লীগের সভাপতি মিহির ভান্ডারী ও ব্রাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির প্রজেক্ট ম্যানেজার সফিকুর রহমান স্বপন।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন