২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,সকাল ১০:৪০

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হল দুর্গোৎসব

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২২

  • শেয়ার করুন

খুলনা সহ সারা দেশে ভক্তবৃন্দের কন্ঠে ’মা তুমি আবার এসো’ এ আকুতি জানিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার। পাঁচদিন ব্যাপী দুর্গোৎসবের শেষ দিনে বুধবার মন্ডপে মন্ডপে দশমীর বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে ঘটে সমাপ্তি। এরপর শুরু হয় দেবীর বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহনের পালা।

গত শনিবার বোধনে অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে মর্ত্য। হিন্দু বিশ্বাসে টানা পাঁচ দিন মৃন্ময়ীরুপে মন্ডপে মন্ডপে থেকে ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। এবার গজে আসা দেবী ফিরেছেন নৌকায়। মন্ডপে মন্ডপে ভক্তদের ঢল, ঢাক আর শঙ্খধ্বনি, সিঁদুর খেলায় মুখরিত হয়ে ওঠে মন্ডপ প্রাঙ্গন। একদিকে উৎসবের আমেজ অন্যদিকে বিদায়ের সুর, শুরু হয় আনন্দে বিষাদে বিদায় উৎসব। বুধবার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে বিজয়ার শোভাযাত্রা শেষে ছোট যমুনা নদীর চকশ্যাম ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী দুর্গার বিদায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে সকল অপশক্তি বিনাস হয়। বিজয়া শোভাযাত্রার পূর্বে নারীরা দেবীর ললাটের সিদুঁর আপন ললাটে এঁকে নেন। পুরুষরা অশুভ শক্তির বিনাশ কামনা করেন। সবার অন্তরে কামনা আগামী শরতে আবার বাঙালী হিন্দুর ঘরে ঘরে ফিরে আসবেন মা উমা। আনসার ও পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের টীম তদারকি করে প্রতিটি পূজা মন্ডপ গুলোতে। বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রায় নারী, পুরুষ, শিশু কিশোর সকলেই অংশ গ্রহন করেন বাদ্যযন্ত্র সহ। চকশ্যাম ঘাটে পুরোহিতের শেষ মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় রীতি মেনে অপরাজিতা পূজা শেষে বিসর্জন দেয়া হয় দেবী দুর্গাকে। শেষে আনা হয় শান্তি জল।

শনিবার বিকেল ৫টা থেকে ভৈরব নদের ফুলতলায় বিসর্জন শুরু হয়। সন্ধ্যার পর ভৈরব নদের জেলখানা ঘাট, চরেরহাট, দৌলতপুর ও রেলীগেট ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। দামোদর সনাতন সংঘ, বকশী বাড়ি পূজা মন্দির, সাহাপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, পশ্চিমপাড়া ভৈরব পূজা মন্দির, কিশোর ভ্রাতৃ সংঘ, ফুলতলা বাজার জামিরা রোড পূজা মন্দির, বসুরাবাদ কানইডাঙ্গা মাতৃ মন্দির, পয়গ্রাম পালপাড়া পূজা মন্দিরসহ ফুলতলা, দামোদর ও জামিরা ইউনিয়নের সব মন্দিরের প্রতিমা ফুলতলা ঘাটে বিসর্জন করা হয়। অনুরূপভাবে জেলখানা ঘাট, চরেরহাট, দৌলতপুর ও রেলীগেটে মহানগরীর বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। দেবী বিসর্জনে সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে মহানগরীর শীতলাবাড়ী, দোলখোলা, টুটপাড়া গাছতলা, ঊমা শিবমন্দির, কয়লাঘাট, রূপসা মহাশ্মশান কালি, বাগমারা, তালতলা ও শিববাড়ীতে। বিসর্জনের আগে নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে সিঁদুর পরান এবং মিষ্টি মুখ করান। পরে মন্দিরে আগত নারীরা একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর বিনিময় করেন। এরপর বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়। এ শোভাযাত্রাগুলোয় যোগ দেন মন্দিরগুলোর পুণ্যার্থীরা। শোভাযাত্রাগুলো ভৈরব নদের ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়। এদিকে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জনের ঘাটসমূহে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিসর্জনের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি পূজা কমিটির নিজস্ব ভলান্টিয়াররাও দায়িত্ব পালন করেছেন।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন