প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫

তথ্য প্রতিবেদক : সুন্দরবন উপকূলের খুলনা-৬ আসনে (কয়রা-পাইকগাছা) বিএনপির প্রার্থী হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন খুলনা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী। একদিকে সদস্য সচিবের পদ ফিরে পাওয়া অন্যদিকে কোন অনুমান ছাড়াই সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছেন।
প্রার্থীতা ঘোষণার পর খুলনার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার সর্বত্রই চলছে এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা।
দলের একটা বড় অংশ ইতোমধ্যে দুই উপজেলায় মনিরুল হাসান বাপ্পীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে আনন্দ মিছিলও করেছে। সবার উর্ধ্বে দল এবং ধানের শীষ উল্লেখ করে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক প্রার্থী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দলের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে স্থানীয় কেউ প্রার্থী না হওয়ায় দলের কিছু কিছু নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে অনেকেই বিষয় টি ভালোভাবে নিতে পারেন নি। তারা অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করছেন।
এদিকে কোন প্রচার প্রচারণা ছাড়া, এমনকি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সারিতে না থেকে ও বিএনপির মতো একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হয়ে রীতিমতো সবাইকে চমকে দিয়েছেন মনিরুল হাসান বাপ্পী। এই বিষয় টি এখন এলাকার সবচেয়ে চমকপ্রদ এবং সকলের মাঝে কৌতুহল সৃষ্টি করেছে। প্রার্থী হবার পর আজ বৃহস্পতিবারই তিনি নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছালে নেতাকর্মীরা তাকে ব্যাপক সংবর্ধনা জানিয়েছে।
উল্লেখ্য জেলার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা নিয়ে খুলনা -৬ (১০৪) সংসদীয় আসন। একদিন আগে ও এ আসনের নির্বাচন মাঠ গরম এবং দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙা করে রেখেছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। প্রতিদিন দুই উপজেলার কোথাও না কোথাও কোন না কোন প্রার্থীর গণসংযোগ কিংবা সভা সমাবেশ থাকতো।
একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকায় নেতাকর্মীরা বেশ মাঠে ময়দানে সরব ছিলেন। তবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে যার নাম ঘোষণা করা হয়েছে এসব প্রার্থীদের মধ্যে তিনি ছিলেন না। প্রার্থী হিসেবে তার কোন প্রচার প্রচারণা ছিল না, তার কোন নাম ও শোনা যায়নি। এমন কি মনিরুল হাসান বাপ্পীর জন্মস্থান ও এখানে না। তাছাড়া এখানে রয়েছে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। যারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় এমনকি এলাকার ভোটার যেখানে আছে সেখানে গণসংযোগ করে চলেছেন। এই প্রার্থীকেই মোকাবেলা করতে হবে বাপ্পিকে।
মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে যারা মাঠে ময়দানে ছিলেন এলাকায় যেমন তাদের শক্ত অবস্থান ছিল, তেমনি দলেও তাদের বেশ প্রভাব রয়েছে। এদের মধ্যে ছিলেন খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, জেলা সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ডাইরেক্টর সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ মোঃ আব্দুল মজিদ ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সহ সভাপতি এস এম রফিকুল ইসলাম রফিক। মাঝে মধ্যে বাসস চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন কে এলাকায় কাজ করতে দেখা গেছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশী বেশিরভাগ প্রার্থী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে ও উপস্থিত ছিলেন। কে হবেন দলের প্রার্থী এনিয়ে সবাই যখন জল্পনা কল্পনা করছে সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সন এর কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক ঘোষণা সব জল্পনা কল্পনার অবসান করে দিয়েছে। যাদের নাম শোনার অপেক্ষায় ছিল পাইকগাছা ও কয়রার বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘোষণায় তাদের কোন নাম আসেনি। বিএনপির মহাসচিব খুলনা -৬ আসনে প্রার্থী হিসেবে খুলনা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীর নাম ঘোষণা করে রীতিমতো সবাই কে চমকে দেন। অনেকেই বলছেন মনিরুল হাসান বাপ্পী নিঃসন্দেহে একজন পরিশ্রমী এবং ত্যাগী নেতা। তবে অনেকদিন তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ কোন দায়িত্বে ছিলেন না।
গত ১ নভেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আবু হোসেন বাবুর অসুস্থতার কারণে মনিরুল হাসান বাপ্পী কে খুলনা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিবের দায়িত্ব দিয়েছেন। এর দুই দিন পর খুলনা- ৬ আসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী হিসেবে মনিরুল হাসান বাপ্পীর নাম ঘোষণা করা হয়। অনেকেই বলছে এটাই হচ্ছে বিএনপি এবং মনিরুল হাসান বাপ্পীর চমক! এরপর মনিরুল হাসান বাপ্পী অথবা বিএনপি কি চমক দেয় এর জন্য হয়তো আমাদের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে!
এব্যাপারে মনিরুল হাসান বাপ্পি বলেন, আমি তিন বছরের বেশী সময় ধরে এলাকায় কাজ করছি। সেখানে আমার নেতাকর্মীরা রয়েছেন। এলাকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কাজ করছি। নির্বাচন তো সহজ কোন কাজ নয়, সবকিছু মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে।