২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,সকাল ৬:০৯

পার্ল হারবার: মৃত্যুর ৮০ বছর পর সমাহিত জ্যাকবসন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২

  • শেয়ার করুন
পার্ল হারবারে সেদিন নেমে এসেছিল নরকের বিভীষিকা। দুই ঘণ্টাব্যাপী হামলায় প্রাণ হারান ২ হাজার ৪০২ আমেরিকান, আহত হন ১ হাজার ২৮২ জন। অনেকেরই সলীল সমাধি হয় প্রশান্ত মহাসাগরে।
১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর। এদিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে বড় চমক দেখায় অক্ষশক্তির দেশ জাপান। হওয়াই দ্বীপপুঞ্জে আমেরিকার পার্ল হারবার নৌঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে বসে তারা।
৬টি বিমানবাহী জাহাজ থেকে ৩৫৩টি জাপানি যুদ্ধ বিমান, বোমারু বিমান এবং টর্পেডো বিমান নৌ-ঘাঁটিটিতে একযোগে আক্রমণ করে। হামলায় আমেরিকার চারটি যুদ্ধজাহাজ তাৎক্ষণিক ডুবে যায়; অন্য চারটি যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় মারাত্মকভাবে। ধ্বংস হয় ১৮৮টি যুদ্ধবিমান।
পার্ল হারবার সেদিন নেমে এসেছিল নরকের বিভীষিকা। দুই ঘণ্টাব্যাপী হামলায় প্রাণ হারান ২ হাজার ৪০২ আমেরিকান, আহত হন ১ হাজার ২৮২ জন। অনেকেরই সলীল সমাধি হয় প্রশান্ত মহাসাগরে।

এই হামলার জেরেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার আবির্ভাব ঘটে। পদিন ৮ ডিসেম্বর জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট। পাল্টে যায় যুদ্ধের গতিপথ।

পার্ল হার্বার হামলার ৮০ বছর পর নিহত এক আমেরিকান নাবিককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছে তার পরিবার। নাবিকের নাম বার্ট জ্যাকবসন। ফরেনসিক পরীক্ষায় তার দেহাবশেষ শনাক্ত করার পর আর্লিংটন জাতীয় কবরস্থানে মঙ্গলবার সমাহিত করা হয় তাকে।

জ্যাকবসনের ভাগ্নে ব্র্যাড ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘তখন উনার বয়স ছিল ২১। তিনি ওই ৪০০ নাবিকের সঙ্গে ছিলেন, যারা ইউএসএস ওকলাহোমা যুদ্ধজাহাজের দায়িত্বে ছিলেন। জাপানের টর্পেডো হামলার সবাই নিহত হন।’

হামলার দু’বছর পর তাদের দেহাবশেষ উদ্ধার হলেও, অনেককেই এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তারপরও দমে যাননি কর্মকর্তারা। তারা নিহতদের তালিকা তৈরির চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। সর্বাধুনিক ডিনএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ২০১৯ সালে জ্যাকবসনকে শনাক্ত করা হয়।

জ্যাকবসনের সমাহিত করার কথা ছিল আগেই। করোনা মহামারির কারণে তা পিছিয়ে যায়। শেষকৃত্যে জ্যাকবসনের এমন বংশধররা উপস্থিত ছিলেন, যারা তাকে কখনও জানারই সুযোগ পায়নি।

পার্ল হারবারের বর্তমান ছবি।ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘এটা আমাদের কাছে একটা অমীমাংসিত রহস্য ছিল। শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল জ্যাকবসনের, সে কোথায় আছে। এক সময় তার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। ভাগ্য সহায়… অবশেষে উনাকে সমাহিত করতে পেরেছি।’

পার্ল হারবারে হতাহতদের শনাক্তে কয়েক দফায় ব্যর্থ হন আমেরিকান কর্তারা। ২০০৩ ও ২০১৫ সালে দু’দফায় ডিএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, শনাক্তের কাজ করা হয়।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে সন্ত্রাসী হামলার আগপর্যন্ত পার্ল হারবারের ঘটনাটি আমেরিকার মাটিতে সবচেয়ে মারাত্মক ছিল।

হাওয়াইয়ের পার্ল হারবার এখনও একটি সক্রিয় নৌঘাঁটি। এখানে রয়েছে একটি জাদুঘর এবং হামলায় নিহতদের স্মরণে একটি জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন