২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার,দুপুর ২:০২

খুলনার ৭২ জনসহ খুমেক ল্যাবে করোনা শনাক্ত ৭৯, মৃত্যু ৪ জন

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২০

  • শেয়ার করুন

গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) পিসিআর ল্যাবে ৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৭২ জনই খুলনার। এছাড়াও য‌শোরের ৪ জন এবং বা‌গেরহাটের ৩ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আর করোনা আক্রান্তে আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ২৬৮০ জন।

মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) পিসিআর ল্যাব ও খুলনা সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

খুমেকের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান মঙ্গলবার পিসিআর ল্যাবে ২৭৭ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এতে খুলনা নমুনা ছিল ২৪৪টি। মোট পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৭৯ টি। যার মধ্যে ৭২ জনই খুলনা জেলার। খুলনা ছাড়াও য‌শোরের ৪ জন এবং বা‌গেরহাটের ৩ জন করোন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে খুলনায় সরদার রফিকুল ইসলাম (৬৮) নামে এক ক্রীড়া সংগঠকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড ডায়াবেটিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রফিকুল ইসলাম পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের উত্তর শলুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার সরদারের ছেলে। তিনি নগরীর ৮ নম্বর মির্জাপুর রোডের বাসিন্দা।

তিনি খুলনা জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ-সভাপতি ও প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট ক্লাব কপিলমুনি ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (কেকেএসপি) পরিচালক ছিলেন। সরদার রফিকুল ইসলাম খুলনা আবাহনী ক্রীড়া চক্র, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও সোনালী অতীত ক্লাবের আজীবন সদস্য ছিলেন। ক্রিকেট ক্লাব ছাড়াও তার ভলিবল, হ্যান্ডবল, বাস্কেটবলসহ আরো বেশ কয়েকটি টিম রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. শেখ ফরিদ উদ্দীন আহমেদ বলেন, রফিকুল ইসলাম করোনা পজিটিভ নিয়ে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ভোর ৪টায় তার মৃত্যু হয়। তিনি কিডনি ও হার্টের রোগে ভুগছিলেন।

লকপুর গ্রুপ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএমডি ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক আমজাদ হোসেনের মা নুরজাহান বেগম (১০৪) করোনায় মারা গেছেন। মহানগরীর ফর্টিস এসকর্টস কার্ডিয়াক ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের এডমিন অফিসার রুবেল শেখ বলেন, নুরজাহান বেগমের করোনার উপসর্গ ছিলো। আমরা ভিআইপি রোগী হিসেবে তার প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করি। পরে তার নমুনা পরীক্ষায় পজেটিভ রিপোর্ট আসে। পজেটিভ আসার পর আমরা তাকে করোনা হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু তার শারীরীক অবস্থা নেওয়ার মতো ছিলো না। এর মধ্যেই তিনি আজ সকালে মারা যান।

দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সেখ আখতারুজ্জামানের একমাত্র মেয়ে ঐশী বিনতে জামান (৩২) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আওতাভুক্ত করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার মারা যান। তার স্বামী ডাঃ শাহারিয়ার জামান খুলনা আই হাসপাতালের সহকারী পরিচালক। তিনি বলেন, গত ৩০ জুন করোনা শনাক্ত হলেও আমার মেয়ের কোন উপসর্গই ছিল না। গত ৪ জুলাই রাতে তাকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার একটু শ্বাসকষ্ট ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়াও বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ডায়াবেটিক হাসপাতালে সিরাজুল ইসলাম (৭৩)নামে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি দৌলতপুর আঞ্জুমান রোডে। সোমবার দিনগত রাত ৪টার দিকে মির্জাপুরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৬৮) মৃত্যুবরণ করেন। করোনা পজেটিভ ধরা পড়ার পর সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
খুলনা সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে জানা গেছে,
খুলনা জেলায় মোট করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৬৮০ জন, যার মধ্যে মারা গেছে ৪০ জন, সু্স্থ্য হয়েছেন ৪৯৯ জন। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের।

উল্লেখ্য, খুলনায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১৩ এপ্রিল। নগরীর করিমনগর এলাকার অবসর প্রাপ্ত ব্যাংকার আজিজুর রহমান।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন