৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,রাত ১০:৫৩

সালমান সানার মৃত্যু : হত্যা না কি আত্নহত্যা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

কয়রা প্রতিনিধি : কয়রা উপজেলার মসজিদকুড় গ্রামের শিশু সালমান সানা (১২) কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার মা শামসুন্নাহার। আজ শুক্রবার কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন, এই হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আত্নহত্যার ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
শুক্রবার ( ৪ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।
তবে পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় কেউ এখন কোন অভিযোগ করেনি, ফলে পুলিশ অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুন্নাহার লিখিত বক্তব্য বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত্র আনুমান ৯ ঘটিকার সময় আমার পুত্র সন্তান মোঃ সালমান সানাকে সঙ্গে নিয়ে আমি ঘুমাতে যায়। ঘুমানোর পরে সে ঐ দিন ভোরে প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য বাহিরে যায়। তারপর অনেক সময় হয়ে গেলে সে ঘরে ফিরে না আসায় ভোরের আলো শেষে একটু সকাল হলে তাকে খুজতে বের হয়। খুঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে আমার মাতা নাছিমা খাতুন নদীর ধারে গোলপাতার একটি নৌকার ভেতরে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত ও পা নিচে লাগা অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাক চিৎকার কারে। সেখানে তাৎক্ষনিক উপস্থিত হয়ে আমার পুত্রকে উদ্ধার করে স্থানীয় জায়গীর মহল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে দেখতে পাই আমার পুত্রের গলায় বাম পাশে পোড়া দাগ ও গলার বাধনও ঢিলা। তখন আমাদের সন্দেহ হয়। এমনকি তার পক্ষে নৌকায় উঠা সম্ভব নয়। তাকে টেনে নিয়ে পরিকল্পিতভবে হত্যা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, গত ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর একই গ্রামের সিরাজ সানার পুত্র আশরাফুল ও অহেদুল সানার নেতৃত্বে কবুতার ধরাকে কেন্দ্র করে একটি শালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সালিশের এক পর্যায়ে জালাল মোড়ল ও জসিম মোড়লের হুকুমে জালাল মোড়লের পুত্র নাহিদ ও তার স্ত্রী ময়না বেগম, হাফিজুল ওরফে ফটিক, তার পুত্র আব্দুল্যাহ জনসম্মুখে আমার পুত্র সালমানকে হুমকি দিয়া বলে যে, তাকে যেন এলাকায় আর না দেখি। যদি দেখতে পাই তবে তাকে শেষ করে দেবো। ওই ঘটনার রেশ ধরে আমার পুত্রকে হত্যা করা হয়েছে।
পরে তারা আমার পিতা নুর ইসলামকে ভুল বুঝিয়ে এবং হুমকি প্রদর্শন করে সংবাদ প্রকাশ করতে হবে বলে একটি কাগজে স্বাক্ষর করে নেয়। পরে জানতে পারি তাকে দিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কয়রা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই কাজাট করেছে। একটি পরিকল্পিত হত্যা কান্ডকে তারা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, অন্যের পোষা কবুতর চুরির কারণে শিশু সালমানকে তাঁর পরিবারের লোকজন ও গ্রামের মানুষ ভর্ৎসনা করে। এ কারণে সে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের সদস্যরা হত্যার কোনো অভিযোগও করেননি। এ কারণে পুলিশই বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। পুলিশের বিরুদ্ধে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন