৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,রাত ১০:১৩

পৈত্রিক ভিটায় ‘প্রার্থনা কুঞ্জ’ করা হলো না এন্ড্রু কিশোরের

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২০

  • শেয়ার করুন

‘জীবনের গল্প আছে বাকী অল্প’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিল্পী এন্ডু কিশোরের জীবনের শেষ ইচ্ছা পূরণ হয়নি। এমনটাই জানিয়েছেন তার প্রিয়জনেরা ।

গত সোমবার সন্ধ্যায় এই গুণী সংগীত শিল্পীর মৃত্যুর সংবাদ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অবস্থানরত তার আত্মীয়দের কাছে এসে পৌছালে তারাসহ উপজেলাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকেই টিভির সামনে বসে এন্ডু কিশোরের মৃত্যু সংবাদ শুনেছেন আর অঝর ধারায় কেঁদেছেন। সে সময় পুরো এলাকা জুড়ে যেন শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

উপজেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ এই গুণী শিল্পীর এবাবে চলে যাওয়া যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তারা এই শিল্পীর স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে কোটালীপাড়ায় সংগীত একাডেমি স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এন্ডু কিশোর সস্ত্রীক কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের চিথলীয়া গ্রামের পৈত্রিক ভিটায় বেড়াতে এসেছিলেন । এ সময় তিনি তার পৈত্রিক ভিটায় একটি ‘প্রার্থনা কুঞ্জ’ করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার কাকাতো ভাই পূর্ণদান বাড়ৈ।

পূর্ণদান বাড়ৈ বলেন, এন্ডু কিশোর আমার কাকাতো ভাই। তার পিতার নাম ক্ষিতিশ বাড়ৈ। এন্ডু কিশোররা ছিলেন ৩ ভাই বোন। ৩ ভাই বোনের মধ্যে এন্ডু কিশোর ছিল ছোট। তার বড় ভাইর নাম স্বপন বাড়ৈ। বোন শিখা বাড়ৈ। আমার কাকা ক্ষিতিশ বাড়ৈর কর্মস্থল ছিল রাজশাহী। তিনি ওখানে চিকিৎসা পেশায় জড়িত ছিলেন। ওখানেই এন্ডু কিশোরের জন্ম। তবে তার বাবার জন্ম কোটালীপাড়ায় ।

তিনি আরও জানান, এন্ডু কিশোরের পিতা ক্ষিতিশ বাড়ৈ বরিশালে লেখাপড়া করেছেন। এর পর চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করে রাজশাহীতে কর্মজীবন শুরু করেন। তবে তিনি তার পরিবার পরিজন নিয়ে প্রতিবছরই কোটালীপাড়ায় বেড়াতে আসতেন।

এন্ডু কিশোরের অপর এক কাকাতো ভাই এলিও বাড়ৈ বলেন, গত ৭মাস আগে এন্ডু কিশোরের সাথে আমার শেষ কথা হয়েছে। আমাদের এক কাকার মৃত্যুতে অনুষ্ঠান করার জন্য তিনি ১০হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আমাদের যে কোন পারিবারিক অনুষ্ঠানে তিনি আমাদের সহযোগিতা করতেন। বিভিন্ন সময়ে ফোন করে আমাদের খোঁজখবর নিতেন। এন্ডু কিশোর একজন ভালো মনের মানুষ ছিলেন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও শেখ হাসিনা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ বাড়ৈ বলেন, সংগীত শিল্পী এন্ডু কিশোরের মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমরা চাই এই মহান শিল্পীর নামে কোটালীপাড়ায় একটি সংগীত একাডেমি বা একটি সংগীত স্কুল স্থাপন করা হোক ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী এন্ডু কিশোরের মৃত্যুতে দেশের সকল সংগীত প্রেমীরাই শোকাহত। দেশের এই মহান সংগীত শিল্পীর পৈত্রিক ভিটা কোটালীপাড়া। এটা সত্যিই কোটালীপাড়াবাসীর জন্য গর্বের। আমরা এই গুনী শিল্পীর স্মৃতি রক্ষার্থে কোটালীপাড়ায় একটি সংগীত একাডেমি বা সংগীত স্কুল স্থাপনের জন্য চেষ্টা করবো।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন