২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,দুপুর ২:৫৩

জুনিয়রদের রাতভর নির্যাতন : খুবির ৫ শিক্ষার্থীকে শাস্তি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২১

  • শেয়ার করুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের রাতভর শারীরিক নির্যাতন ও গালিগালাজ করার অপরাধে পাঁচ জন এবং তদন্ত ও একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করায় আরও দুই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব মো. শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। তবে একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা প্রদানের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন দুই শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গালিগালাজ করা, অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিকে দিয়ে মারধর, স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো ও হুমকি প্রদানের অপরাধে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান রাজাকে দুই বছর (৪ টার্ম) ও শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গালিগালাজ করার অপরাধে একই ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের রাজ বর্মন বিধানকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঘটনার সময় উপস্থিত থেকে নির্যাতনে পরস্পরকে উসকানি দেয়ার অপরাধে একই ডিসিপ্লিনের মিনহাজুর রহমানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার, সাবেরুল বাশার নিরবের এক বছরের জন্য সার্টিফিকেট স্থগিত এবং ফাহাদ রহমান অঝোরকে অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদানের শর্তে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া দুইজন শিক্ষকের পথ আটকানো ও তাদের সঙ্গে গুরুতর অসদাচরণ করায় বাংলা ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের মোবারক হোসেন নোমান (দুই টার্ম) ও ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের ইমামুল ইসলামকে (চার টার্ম) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

তবে নোমান ও ইমামুলের অভিযোগ, ২০২০ সালের জানুয়ারির ১ তারিখে শিক্ষার্থীরা তাদের ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করে। আন্দোলন চলাকালীন এফডাব্লিউটি ডিসিপ্লিনের দুই শিক্ষক ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ক্যাম্পাসের হাদী চত্বর অতিক্রম করতে চান। তখন শিক্ষার্থীরা ওই দুইজন শিক্ষককে পাশের রাস্তা ব্যবহারের অনুরোধ জানান। কিন্তু তারা রাস্তা পরিবর্তন না করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরের মাসে এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে মাত্র তিনজনকে অভিযুক্ত করেন। কিন্তু সেখানে কয়েকশ শিক্ষার্থী আন্দোলনে শরিক ছিলেন। এখানে মাত্র তিনজনেক অভিযুক্ত করা এবং দুই জনকে সাজা প্রদান করা অমূলক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব মো. শরিফ হাসান লিমন বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতে আমরা শাস্তি দিতে চাইনি। তবে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফাহাদ রহমান অঝোরের তদন্তের বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে। গৃহিত সিদ্ধান্তগুলোর ব্যাপারে কোনো শিক্ষার্থী চাইলে একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করতে পারবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি খুবির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের পাঁচ শিক্ষার্থীকে সারারাত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা বিচার চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে।

অপরদিকে একই বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বেতন-ফি কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় দুই শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ করলে ওই শিক্ষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে এ সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন