২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,রাত ৯:০৫

খুলনায় ডাঃ রকিব হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ : চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২০

  • শেয়ার করুন

খুলনা গল্লামারি রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রকিব খান (৫৯) হত্যার ঘটনায় সব আসামি ধরা পড়া না পর্যন্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) । তবে এর আওতার বাইরে থাকবে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও করোনা হাসপাতাল।আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডাঃ রকিব হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের বিচারের দাবিতে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (১৭ জুন) বিকেলে বিএমএ এর এক সভায় চিকিৎসক নেতারা এ সিদ্ধান্ত নেন।

বিএমএর খুলনার সভাপতি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, ডা. রকিবের হত্যার ঘটনার সব আসামিদের গ্রেফতার ও খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুলের প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করবে।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, বিসিএস স্বাস্থ্য প্রশাসনের পরিচালক পদমর্যাদায় একজন কর্তকর্তা ও বাগেরহাট মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অধ্যক্ষ ডা. রকিব রোগীদের স্বজন কর্তৃক মারাত্মক আঘাত পাওয়ার পরও ওসি মামলা নেননি। যে কারণে তার প্রত্যাহার দাবিসহ অবিলম্বে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে চিকিৎসকরা বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন। যা সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে এর আগে দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে মহানগরীর সাত রাস্তার মোড়ে বিএমএ, বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএইচসিডিওএ) ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল প্র্যাক্টিশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমপিএ) আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

নগরীর মোহাম্মদ নগরের পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমকে ১৪ জুন সিজারের জন্য রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টায় অপারেশন হয়। বাচ্চা ও মা প্রথমে সুস্থ ছিলেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ হলে ১৫ জুন সকালে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানের চিকিৎসকরাও রোগী রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে ঢাকায় রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে ১৫ জুন রাতে শিউলী বেগম মারা যান।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৫ জুন রাতেই এ ঘটনায় সম্ভাব্য হামলাকারী রোগীর স্বজন কুদ্দুস, আরিফ, সবুরসহ কয়েকজন নারী। তারা ১৫ জুন রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ডা. রকিবকে লাথি ঘুষি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করতে থাকে একপর্যায়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এতে তার মাথার পেছনে জখম হয়। তাকে প্রথমে সিটি মেডিকেলে পরে গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তিনি শুধু রাইসা ক্লিনিকের মালিক নন বাগেরহাট মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অধ্যক্ষও ছিলেন। এছাড়া সিনিয়র এ চিকিৎসক বিসিএস স্বাস্থ্য প্রশাসনে পরিচালক পদমর্যাদায় চাকরি করতেন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার আজীবন সদস্য ছিলেন ডা. রকিব।

খুলনায় চিকিৎসক রকিব উদ্দিনের হত্যাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান। অন্যথায় এর পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন তিনি। বুধবার  নিজ ফেসবুকওয়ালে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ডা. ইকবাল আর্সলান।


ডা. ইকবাল আর্সলান লিখেছেন, ‘‘খুলনার আইন শৃঙ্খলাবাহিনী এবং প্রশাসন আমার ভাইয়ের হত্যকারীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনুন। যেকোন পরিচয়ে হত্যাকারীদের কেউ আড়াল করার চেষ্টা করবেন না। পরিনাম ভয়াবহ হবে, প্রয়োজনে এই কোরনা কালেই হবে।’’

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন