২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,দুপুর ১২:০৫

উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ করতে পারে চীন: জাতিসংঘ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২

  • শেয়ার করুন

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে দেশটির বিরুদ্ধে উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে জাতিসংঘ। ওই প্রদেশে নিপীড়ন সম্পর্কিত জাতিসংঘের বহুল প্রতীক্ষিত প্রতিবেদনে দেশটির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক এই সংঘটি।

চীন এই প্রতিবেদন প্রকাশ না করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল এবং বেইজিং এই প্রতিবেদনকে পশ্চিমা শক্তিগুলোর ‘প্রসহন’ বলে অভিহিত করে আসছে।

বৃহস্পতিবার এই খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি অনলাইন।

প্রতিবেদনে উইঘুর মুসলিমসহ অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগ মূল্যায়ন করা হয়। যদিও চীন নিপীড়নের এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

তবে তদন্তকারীরা বলেছেন, তারা সম্ভাব্য ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটিত হওয়ার ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ পেয়েছেন।

তাদের অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের অধিকার বঞ্চিত করতে এবং ‘নির্বিচারে আটকে রাখার ব্যবস্থা’ প্রতিষ্ঠা করতে চীন অস্পষ্ট জাতীয় নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন প্রতিবেদনটি তৈরি করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দিদের সঙ্গে ‘যৌন এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাসহ খারাপ আচরণ’ করা হয়েছে। এছাড়া অনেক বন্দি জোরপূর্বক চিকিৎসার মুখে পড়েছেন এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা নীতির বৈষম্যমূলক প্রয়োগের শিকার হয়েছেন।

তিনি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কারাগার বা আটক সকলকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চীনা সরকারকে সুপারিশ করেছিলেন।

কার্যালয় আরও বলেছে, ২০১৭ সাল থেকে পরিবার পরিকল্পনা নীতির জোরপূর্বক প্রয়োগের মাধ্যমে প্রজনন অধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য ইঙ্গিত রয়েছে। সরকারী তথ্যের অভাব, এই নীতিগুলির বর্তমান প্রয়োগের সম্পূর্ণ মাত্রা এবং প্রজনন অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত লঙ্ঘনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন করে তোলে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে প্রধানত মুসলিম জাতিগত সংখ্যালঘু যার সংখ্যা প্রায় ১ কোটি, বন্দী শিবিরে জোরপূর্বক তাদের শ্রমের ব্যাপক ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে অধিকার গোষ্ঠীগুলো বেইজিংকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছে, এর মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র।

চীন দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জেনেভায় চীনের মিশন এই প্রতিবেদনটিকে মিথ্যা তথ্য এবং অপরাধের অনুমানের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা দেশ এবং চীন বিরোধী শক্তি দ্বারা পরিকল্পিত একটি ‘প্রহসন’ বলে বর্ণনা করেছে।

প্রতিবেদন প্রকাশের আগে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেছেন, বেইজিং বারবার এর বিরোধিতা করেছে। তিনি বলেন, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।

ঝাং বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সবাই খুব ভালো করেই জানি যে তথাকথিত জিনজিয়াং ইস্যুটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর উদ্দেশ্য অবশ্যই চীনের স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ন করা এবং চীনের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি না এটি কারো জন্যই কোনো উপকার করবে, এটি কেবল জাতিসংঘ এবং একটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতাকে ক্ষুণ্ন করবে।’

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন