প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
রূপসা প্রতিনিধি : খানা-খন্দক ও বড় বড় গর্তে পরিণত পূর্ব রূপসা বাস স্ট্যান্ডের প্রবেশ মুখ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে রূপসা ঘাট পারাপারের হাজার হাজার মানুষ। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। খুলনা মংলা মহাসড়ক অভিমুখ সড়কের মাত্র ৩০০ মিটার রাস্তা প্রায় দু’বছর যাবত সংস্কার না করাই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
নিয়মিত ঘাট পারাপারের স্থানীয়রা জানান পূর্ব রূপসা বাস স্ট্যান্ড থেকে আট দশটি রুটে বাস চলাচল করে। এছাড়া এই স্টান্ডে যুক্ত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন সড়কের প্রবেশ মুখ। যার ফলে খানাখন্দকে পরিণত বাসস্ট্যান্ডের এই ভয়াবহ অংশটি অতিক্রম করতে হয় কয়েক’শ যাত্রীবাহি বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, পিকআপ, মাহেন্দ্র, ভ্যান গাড়ি, সাইকেল ও মোটরসাইকেল। এসব পরিবহনের মধ্যে বাস, মাহেন্দ্র, ভ্যান গাড়ি, সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহীদের মধ্যে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার লোক রূপসা ঘাট পারাপার হয়ে থাকে। মালামাল বোঝায় ট্রাক পিকআপ ও যাত্রীবাহী অন্যান্য পরিবহন গুলি ভাঙ্গা রাস্তা অতিক্রম করে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটে এখানে। বর্ষা মৌসুমে বড় বড় গর্তে পানি জমে থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়েছে।
বাসস্ট্যান্ডের মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ ইজাজ শেখ বলেন, দুই বছর ধরে আমরা যে কি অবস্থায় রয়েছি তা বলে বোঝাতে পারবো না। বাসস্ট্যান্ডের এই ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটে। ভ্যানে করে ঘাট পর্যন্ত কোন রোগী নিতে গেলে তার অবস্থা আরো শোচনীয় হয়ে পড়ে। স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা সব থেকে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয়। বেশিরভাগ সময় তাদের পোষাক নষ্ট হয়ে যায়।
বাস স্ট্যান্ডের স্টাটার গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের স্টান্ডের বাসগুলি যাত্রী বোঝাই করে আসা-যাওয়ার সময় খুবই ঝুঁকি নিয়ে অতিক্রম করে এই ভাঙ্গা অংশ। রাস্তার ভিতর সৃষ্টি হওয়া গর্তে পড়ে গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটিও দেখা দেয়।
ভ্যানচালক আকবর আলী বলেন, স্ট্যান্ডের মুখে থানা-খন্দক থাকায় আমাদের ভ্যান গাড়ির চাকা বসে যাই, এক্সেল ভেঙে যায়। কখনো কখনো ভ্যান, মোটর সাইকেল, ইজিবাইক ও মাহেন্দ্র গাড়ি উল্টে পড়ে।
বাস শ্রমিক বোরহান উদ্দীন বলেন, ভাঙ্গা জায়গা দিয়ে গাড়ি যাওয়া-আসার সময় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। ভ্যান গাড়ি ভেঙে পড়ে থাকে, মাহেন্দ্র ও ইজিবাইক এবং মোটরসাইকেল উল্টে যায়। যাত্রীদের গালিগালাজ শুনতে হয়। অথচ বাসস্ট্যান্ড উন্নয়নের নামে প্রতিদিন সিটি কর্পোরেশনের আদায়কারীকে বাস প্রতি আমাদের ২৫ টাকা চাঁদা দিতে হয়। রূপসা ঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে টোল আদায় করছে। অথচ যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে তাদের কোন ভূমিকা নেই। সিটি কর্পোরেশনের আদায়কারী মাহবুবকে আমরা বারবার বলেছি কর্তৃপক্ষকে বাসস্ট্যান্ডের এই দুরবস্থার কথা জানাতে কিন্তু সে কোন গুরুত্ব দেয় না।
নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন বুলবুল বলেন, বাসস্ট্যান্ডের ওই ভাঙ্গা অংশের কারণে জন দুর্ভোগ বাড়ছে একথা মিথা নয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু নেই। কেননা খুলনা-মোংলা মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথের। যদিও সড়ক বিভাগের রাস্তা-ঘাটের জন্য আমাদের কোন বরাদ্দ নেই, তারপরও জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।
রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর জাহান বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। জেলা সমন্বয় সভায় সড়কের এই বেহাল দশার বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি স্থায়ীভাবে সমাধানের চেষ্টা করবো।