২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,দুপুর ১:৩৫

জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

মোংলা প্রতিনিধি : নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে দুই থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে গোটা সুন্দরবন। বৃহস্পতিবার (৩ আগষ্ট) দু’বার করে এভাবে তলিয়ে থেকেছে সুন্দনবন। সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় এলাকা পাঁচ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে থাকালেও সব থেকে উচু এলাকা এই ম্যানগ্রোভ বনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বণ্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রও দুই ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে, দু’দিন ধরে জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বণ্যপ্রাণি ভাগ্যে কি ঘটেছে তা নিশ্চিত করে জানা না গেলেও করমজল বণ্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রর সেডে থাকা হরিণ, কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বাটাগুর বাচকা কচ্ছপগুলো নিরাপদ রয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ীবাঁধের বাইরে থাকা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, রামপাল, বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলার শতাধিক গ্রামসহ বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ ও মোংলা পোর্ট পোরসভার নিম্নাঞ্চলের অন্তত সহস্রাধিক বাড়িঘরে পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে ভারী বর্ষণে জনজীবন আরো বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। জলোচ্ছ্বাসে পানগুছি নদীর পানি তোড়ে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের নতুন করে আধা কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক ধসে গেছে। ভাঙ্গন হুমকিতে পড়েছে নদীর তীরবর্তী ২৫ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক, বাড়িঘর, বাজার, ১২ মিটার বেড়িবাঁধসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার মো. আজাদ কবির জানান, বৃহস্পতিবার থেকে সুন্দরবনের সব থেকে উচু এলাকা করমজল বণ্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রটি জলোচ্ছ্বাসে দুই ফুট পানিতে দু’বার তলিয়ে থাকছে। এই বণ্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রর সেডে থাকা হরিণ, কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বাটাগুর বাচকা কচ্ছপগুলো নিরাপদ রয়েছে।
বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের সব থেকে নিচু এলাকায় হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণিরা ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় গাছ ও শতাধিক পুতুরের উচু পাড় ও বন বিভাগের অফিস এলাকঅয় আশ্রয় নিয়ে টিকে থাকে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের হাত থেকে সুন্দরবনের বণ্যপ্রানিদের রক্ষায় মাটির উচু ১২টি টিলা নির্মা করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে, মেরেলগঞ্জ উপজেলার নদীর তীরবর্তী পঞ্চকরন ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা, বারইখালীর চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল খান মহারাজ, হোগলাবুনিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরামুজ্জামান ও বহরবুনিয়ার চেয়ারম্যান রিপন হোসেন তালুকদার বলেন, গত দুই দিনের পানির চাপে নদীর তীরবর্তী তাদের ইউনিয়নগুলো অনেক সড়ক ভেঙে গেছে। দেবরাজ পঞ্চকরন বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে এক সপ্তাহ পানির চাপ থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরও বাড়বে।
বাগেরহাট জেলা পানিউন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোরেলগঞ্জ শহর সংলগ্ন রামপাল-মোংলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য সম্ভাব্যতা সমিক্ষার জন্য মন্ত্রানালয়ে প্রস্তাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও ইতোমধ্যে পানগুছি নদীর ভাঙন হতে বাগেরহাট জেলা সদর সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ এবং বিষখালী নদী পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি কাজ শেষ হলে এ সমস্যা থাকবে না।

 

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন