প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। নতুন করে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
এদিকে সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে আবারও কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপেই ট্রলার ডুবে যায় বলে জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা যাত্রীরা।
সোমবার সকালে মাড়েয়ায় দুজন, দেবীগঞ্জে দুজন ও দিনাজপুর খানসামা এলাকা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহালয়া উপলক্ষে করতোয়া নদী ট্রলারে পার হচ্ছিলেন শতাধিক সনাতন ধর্মের মানুষ। এ সময় ট্রলারটি কিছুদূর যাওয়ার পর দুলতে শুরু করলে মাঝি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে নদীর মাঝখানে ট্রলারটি ডুবে যায়। অনেকেই সাঁতরে তীরে উঠলেও শিশুসহ বাকিরা ডুবে যায়।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
এরা হলেন: উপজেলার মাড়েয়া ফুটকিবাড়ী এলাকার হেমন্তের মেয়ে কলি রানী (১৪), দেবীগঞ্জ শালডাঙা হাতিডোবার কার্তিক রায়ের স্ত্রী লক্ষ্মী রানী (২৫), কাবুল চন্দ্র রায়ের ছেলে দিপঙ্কর চন্দ্র রায় (৩), মাড়েয়া বামনপাড়া এলাকার সজিব চন্দ্র রায়ের মেয়ে প্রিয়ন্তী (২), দেবীগঞ্জের লক্ষ্মীগড় ডাঙাপাড়া এলাকার চন্ডি দাসের স্ত্রী প্রমিলা রানী (৫৫), দেবীগঞ্জ পশ্চিম শিকারপুর এলাকার কালি কান্তের ছেলে অমল চন্দ্র (৩৫), রবীন চন্দ্রের স্ত্রী তারা রানী (২৪), পাঁচপীর বংশীধর পূজারি এলাকার মৃত চুড়ামোহন রায়ের স্ত্রী ধনবালা (৫৭), রমেশ চন্দ্রের স্ত্রী সুমিত্রা রানী (৫৭), ময়দান দিঘি এলাকার বিলাশ চন্দ্রের স্ত্রী সফলতা রানী (৫৫), মাড়েয়া বামনহাট এলাকার রমেশ চন্দ্রের স্ত্রী শিমলা রানী (৩৫), বড়শশী কুমারপাড়া এলাকার আহম্মদ আলীর ছেলে হাছান আলী (৫২), মাড়েয়া আলোকপাড়া এলাকার রমেশ চন্দ্র ও মিনুতি রানীর শিশু কন্যা উশোশী, দেবীগঞ্জের হাতিডুবা এলাকার নারায়ণের শিশু কন্যা তনুশী, পাচঁপীর মদনহার এলাকার রতন চন্দ্র ও শুতী রানীর শিশু কন্যা শ্রেয়শী, সাকোয়ার গড় দিঘি বাবু বাজার এলাকার ধর্ম নারায়ণের শিশু কন্যা প্রিয়ন্তী, মাড়েয়া এলাকার রবীন্দ্রের ছেলে বিলাশ চন্দ্র, মাড়েয়া বামন হাট এলাকার নির্মল চন্দের স্ত্রী শোভা রানী (২৭) ও খুশি রানী নামে এক নারী। এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোলেমান আলী বলেন, মৃত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হবে। এ ছাড়া আহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, এটি এ জেলার ইতিহাসে ভয়াবহ ট্রলারডুবি। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কাজ চলছে। মৃতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেয়া হবে। জেলা প্রশাসন আহতদের চিকিৎসা খরচ বহন করবে।