প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১
চেক জালিয়াতির মাধ্যমে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পাঁচ কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেন ও সচিব এএইচএম আলী আর রেজাকে ওএসডি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই দুই কর্মকর্তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যশোর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীবকে। রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক সরকারকে যশোর বোর্ডের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোহা. মকবুল হোসেনকেও ওএসডি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তার স্থলে বোর্ডে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে একই বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক হাবিবুর রহমানকে।
সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে এ বছর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের জন্য বই কিনতে ১৮-২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই টাকার চেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা শিক্ষা বোর্ডে নিতে গেলে তাদের চেয়ারম্যানের লেখা ছয় হাজার টাকা মূল্যের কয়েকটি বই ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। ছয় হাজার টাকা নিয়ে একটি করে ভাউচার আর ২০ হাজার টাকার চেক ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের।
এছাড়া মঙ্গলবার দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে রাজশাহীর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. কামরুল ইসলামকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ডের বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৮ অক্টোবর বোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিবসহ মোট পাঁচজনের নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর গত ২৩ অক্টোবর ধরা পড়ে আরও আড়াই কোটি টাকা জালিয়াতি ও আত্মসাতের ঘটনা।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এবং দুদকের মামলা মাথায় নিয়েও একমাসের বেশি সময় স্বপদে বহাল ছিলেন এই চেয়ারম্যান ও সচিব। এত অভিযোগ থাকার পরও কেন তাদের আগেই সরিয়ে দেওয়া হলো না, তা নিয়ে সমালোচনা করছেন শিক্ষা প্রশাসন সংশ্নিষ্টরা।
চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা ও অভিযোগ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততায় এমন বৃহৎ আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সারাদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সবশেষ তাদেরকে ওএসডি করল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।