প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে নদীতে লাফিয়ে পড়াদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশের ডুবুরি দল।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে তিন বাহিনীর তিন দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। ঝালকাঠির সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ডুবুরি দল ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। তারা সবাই লঞ্চের আগুন থেকে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দেন। উদ্ধার অভিযান চলছে।
এদিকে সকাল থেকে নদী তীরের গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় দগ্ধদের স্বজনরা ভিড় করেন। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর তীর।
এদিকে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ ৮০-৯০ জন বরিশাল, ঝালকাঠিসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে, বরিশালের বার্ন ইউনিট বন্ধ থাকায় সেখানে দগ্ধ রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, ‘চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগটি বন্ধ রয়েছে। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ৭২ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়েছে।’
জানা যায়, লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া এলাকায় আসলে গতরাত ৩টার দিকে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লাগে। পরে লঞ্চটি সদর উপজেলার দিয়াকুল এলাকায় গিয়ে নদীর তীরে নোঙর করে। খবর পেয়ে ঝালকাঠির ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরে দগ্ধ যাত্রীদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছেন। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানান, ঢাকা থেকে ৩১০ জন যাত্রী নিয়ে বরগুনা যাচ্ছিল এমভি অভিযান নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ। রাতে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লেগে দগ্ধ হয়ে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ২০০ জনেরও বেশি যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হক জানান, ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যাত্রীদের উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন। এদিকে এ ঘটনা তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।