প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫
প্রকাশিত:
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের নবাতকাটি গ্রামে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নারী কেলেঙ্কারি আড়াল করতে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী শামিম হোসেনকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছেন বিজিবি সদস্য ইমরান হোসেন।
ঘটনাটি ঘটে ৮ জুন রাত সাড়ে ৭টার দিকে। স্থানীয়রা জানান, ওইদিন শামিমকে নিজ এলাকা থেকে আটক করে বিজিবি। পরে তাকে ২৫ বোতল ভারতীয় কফ সিরাপ উইন কোয়েক্স এবং ৫০০ রুপি সহ থানায় সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা (এফআইআর নং-১৬, তারিখ ০৯-০৬-২০২৫) দায়ের করা হয়। তবে এ সময় বিজিবি সদস্য ইমরান সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, শামিমকে ১২৫ বোতল মাদকসহ আটক করা হয়েছে। সেই অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের হাতে রয়েছে।
জেল থেকে মুক্ত হয়ে শামিম অভিযোগ করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ঘটনার দিন বিকালে মাছ বিক্রির দুই লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিজিবি সদস্য ইমরান ও তার সহযোগীরা তাকে আটক করেন। এসময় তারা মারধর করে শামিমের কাছে থাকা নগদ টাকা, দেড় ভরি স্বর্ণের চেইন ও দুটি দামি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে বিজিবির গাড়ি থেকে মাদক নামিয়ে তার মোটরসাইকেলে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
শামিম দাবি করেন, কিছুদিন আগে তিনি স্থানীয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী কবির হোসেনের মেয়ের সঙ্গে ইমরানের অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। বিষয়টি তিনি না বললেও অন্য কোনভাবে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আর ইমরান শামিমকে সন্দেহ করে। তাই প্রতিশোধ নিতে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়।
অভিযোগ আরও ঘনীভূত হয় একটি কল রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর। সেখানে কবির হোসেনের স্ত্রী জানান, শামিমকে আটকের পর বিজিবির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তাদের পরিবারকে ক্যাম্পে ডেকে এনে বিজিবিকে অভিনন্দন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে বলা হয়েছিল।
এদিকে মামলার কয়েকজন স্বাক্ষী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। শুধু তাদের নাম-নম্বর সংগ্রহ করে জোরপূর্বক স্বাক্ষী বানানো হয়েছে। তাদের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শামিমকে ফাঁসিয়েছে ইমরান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজিবি সদস্য ইমরান হোসেন বলেন, “আমি ১২৫ বোতল মাদক বলেছি কিনা মনে নেই, হয়তো ভুল হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কথা বলার এখতিয়ার আমার নয়, কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।” অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগকে তিনি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
সাতক্ষীরার সুশীল সমাজের মতে, “ঘটনাটি সুস্পষ্টভাবে প্রতিহিংসার শিকার। নারী কেলেঙ্কারি আড়াল করতেই নিরীহ এক যুবককে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।”