২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,রাত ৯:৪৫

ময়না তদন্তের জন্য কুয়েট শিক্ষকের লাশ উত্তোলন করে ঢাকায় প্রেরণ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২১

  • শেয়ার করুন

কুষ্টিয়ায় ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক সেলিম হোসেনের লাশ। তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের বিষয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। পরে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। কুষ্টিয়ায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ না থাকায় বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম। এতে পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

বুধবার(১৫ডিসেম্বর) সকালে কবর থেকে লাশটি তোলা হয়। লাশটি দাফন করা হয়েছিল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামের কবরস্থানে। লাশ উত্তোলনের পর তা ময়নাতদন্তের জন্য বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। লাশ উত্তোলনের কাজ তদারক করেন কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার।

এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে মরদেহ উত্তোলনের কথা ছিল। কিন্তু লাশ উত্তোলন শেষ করতে রাত হয়ে যাবে ভেবে তা আর উত্তোলন করা হয়নি। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশরাফুল আলম, চিকিৎসা কর্মকর্তা রুমন রহমান ও মাহফুজুর রহমান। বেলা দেড়টার দিকে তাঁরা মর্গে প্রবেশ করেন। এর আগে লাশ তোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৬ ডিসেম্বর খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদারের পাঠানো একটি চিঠি হাতে পান কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিচুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খানজাহান আলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহরিয়ার হাসান লাশ কবর থেকে তুলে ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করেন। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয়।

গত ৩০ নভেম্বর কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন (৩৮) ক্যাম্পাসের পাশের ভাড়া বাসায় মারা যান। ১ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়া তাঁর মরদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে দাফন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর মানসিক নিপীড়নের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড। অধ্যাপক সেলিমের পরিবারও এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন