২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,সন্ধ্যা ৬:৪৫

শিরোনাম
খুলনায় ১৯ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা ও আর্থিক সুবিধা প্রদান সিএসএস মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রাম’র খুলনার সেনের বাজার সিএসএস কার্যালয়ে রেভারেন্ড পল মুন্সী স্মরণে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প খুলনায় “মহাসড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানে অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা” অনুষ্ঠিত খুলনায় “৫ বছরের জন্য শিশু কল্যাণে যৌথ পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা” ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’র খুলনায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর ২ দিনব্যাপী “শিশু কল্যাণে পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা-২০২৫” এর সমাপনী অনুষ্ঠিত শহীদ সাকিবের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে খুলনায় এনসিপি’র কার্যক্রম শুরু নগরীতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর গোলাগুলি, পলাশসহ গ্রেপ্তার ১১ খুলনায় পদ্মা ব্যাংকে জমানো অর্থ ফেরত না পেয়ে বিপাকে গ্রাহকরা, ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ সকল শহীদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিনম্র শ্রদ্ধা

মধুমতি ও তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২২

  • শেয়ার করুন

মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত মধুমতি সেতু এবং শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১টা ১২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ, নড়াইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং নারায়ণগঞ্জ সেতু প্রান্তে যুক্ত হয়ে সেতু দুটোর সেতুর উদ্বোধন করেন।

গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের সীমান্তে নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেইনের সেতু মধুমতি সেতু।

নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে ২০০৮ সালে নড়াইলের সুলতান মঞ্চে নির্বাচনী জনসভায় কালনা ঘাটে এ সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি তিনি ‘কালনা সেতু’ নামে এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বাংলানিউজকে বলেন, মধুমতি নদীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজরিত, মধুমতির নামে বড় কোন স্থাপনা নেই।

সেজন্য মধুমতি নদীর মতো সুন্দর একটি নামে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধুমতি নদীর নামে সেতুটির নামকরণ করেছেন।
সেতু উদ্বোধনের আগের দিন রোববার তা পরিদর্শনে গিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শ্যামল ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার বেলা ১২টায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর রাত ১২টায় জনসাধারণের চলাচলের জন্যে সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

নড়াইলের লোহাগড়ার উপজেলা এবং গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত এ সেতু উদ্বোধন হওয়ায় নড়াইল যশোরসহ এ অঞ্চলের মানুষ সড়কপথে সরাসরি ঢাকা যাতায়াত করতে পারবে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও এ সেতু ভূমিকা রাখবে বলে সরকার আশা করছে।

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী ও কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, ৯৬০ কোটি টাকায় নির্মিত মধুমতি সেতু দেশের প্রথম ছয় লেইনের সেতু, যার প্রস্থ ২৬ দশমিক ১ মিটার। সেতুর উভয় পাশে ৬ লেইনের সংযোগ সড়ক রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার।

শঙ্করপাশা গ্রামের কৃষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আগে ঢাকায় যেতে একদিন লাগত। এখন দুই ঘণ্টা আড়াই ঘণ্টার মধ্যে হয়ে যায়।

ব্রিজের আপনার লাভ কী? জবাবে এই কৃষক বলেন, ফেরি একটা ভোগান্তি, দেরি- এটাতো হল না। এখন যাতায়াতটা সহজ হয়ে গেল। এছাড়া আশপাশে শিল্প কলকারাখানা হবে, এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে জমিজমা কিনছেন। জমির দামও বেড়ে গেছে।

লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা শেখ সাজ্জাদ হোসেন মুন্না বলেন, মধুমতি সেতু উদ্বোধনের ফলে মূলত এখন আমরা পদ্মাসেতুর পূর্ণাঙ্গ সুফল ভোগ করতে পারবো। ঢাকা থেকে নড়াইলে আসতে সর্বোচ্ছ দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। ৪৫ মিনিটে জাতির পিতার সমাধিতে যেতে পারবো। ঢাকা থেকে কলকাতার দূরত্বও কমে যাবে। একদিকে যেমন সময় বাঁচবে, অন্যদিকে এ এলাকার মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কটাও বৃদ্ধি পাবে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলার মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগে চালু হলো তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু, যা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান সেতু বলে নাম পেয়েছে।

সেতুটি চালুর মধ্য দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের দূরত্ব অন্তত ২০ কিলোমিটার কমবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস। তিনি বলেন, এখন থেকে ওই দুই পথের যাত্রীদের ঢাকা হয়ে চলাচল করতে হবে না। সেই কারণে অন্তত দুই ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে যাত্রীদের।

ঢাকাকে পাশ কাটানোর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দক্ষিণের যাত্রীরা পদ্মা সেতু দিয়ে মুন্সীগঞ্জ হয়ে শীতলক্ষ্যা সেতু দিয়ে মদনপুর হয়ে চট্টগ্রাম কিংবা সিলেট যেতে পারবেন।

রোববার দুপুরে সেতুটি পরিদর্শনকালে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজও বলেন, এই সেতু চালুর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর সাথে সংযোগ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের। এছাড়া যারা খুলনা, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া এলাকার মানুষ তারা পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করেই সরাসরি কিন্তু চট্টগ্রাম যেতে পারবে। সেক্ষেত্রে একটা বড় দূরত্ব কমে যাবে।

আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব ড.আহম্মদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় নড়াইলের লোহাগড়ায় সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খন্দকার মুহিত উদ্দিন,নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তুজা, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান,পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন, প্রকল্পের পরিচালক শ্যামল ভট্টাচার্য, সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামান,নড়াইল জেলা আওয়ামীরীগের সভাপতি এ্যাড. সুবাস চন্দ্র বোস, সহ-সভাপতি এ্যাড সৈয়দ আইয়ুব আলী, সাধার সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আজগর আলী,লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু,উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুন্সি আলাউদ্দিন, সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মসিয়ূর রহমান প্রমুখ।

এ সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা।বহুল কাঙ্খিত মধুমতি সেতু নির্মানের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। পদ্মা সেতু পার হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রবেশদ্বার কালনা পয়েন্টে মধুমতি সেতুর ফলে কর্মসংস্থান বাড়াবে, অবহেলিত এলাকে উন্নতি করবে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে মধুমতি সেতুর গুরুত্বপূর্ণ। বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে যশোর হয়ে নড়াইলের মধুমতি সেতু হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। এতে বেনাপোল,খুলনা, নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব কমবে। এশিয়ান হাইওয়েতে থাকা এই সেতুটি সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, বেনাপোল, কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকাও রাখবে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন