২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,সকাল ৭:৫৩

ভোমরা বন্দর বহিরাগত ঠিকানাহীন পাগল-পাগলীদের ভিড়ে যেন উন্মুক্ত পাগলা-গারদ

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২১

  • শেয়ার করুন

এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া, ভোমরা(সাতক্ষীরা): জীবন বিনাশী মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমন দুঃসময়ে মানসিক ভারসাম্যহীন অজানা ঠিকানার অচেনা পাগল-পাগলীদের মেলা বসেছে ভোমরা বন্দরে। পরিচয়হীন জড়ো হওয়া এসব পাগল-পাগলীদের ভিড়ে ভোমরা বন্দর এলাকা যেন উন্মুক্ত পাগলা গারদে পরিণত। বন্দর এলাকায় প্রতিদিন বহিরাগত পাগল-পাগলীদের উপস্থিতি রহস্যজনক ও অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোমরা বন্দরসহ এলাকার বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে অবস্থান নিচ্ছে এসব পাগল-পাগলীরা। আপন ভালো পাগলে বোঝে এ কথার বাস্তবতা রয়েছে তাদের মধ্যে। এছাড়াও বিপদমুক্ত পরিবেশে অবস্থান করার অব্যক্ত মানসিকতাও লক্ষ্য করা যায় তাদের মধ্যে। তাই নিরাপদ স্থান হিসাবে বন্দর এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বারান্দা, পরিত্যক্ত দোকানপাটের মধ্যে আবার কখনো বা গাছতলা ও খোলা আকাশের নিচে ছায়াঘেরা স্থানে রাত জাপন করার জন্য বেছে নেয় এসব পাগল-পাগলীরা। তাছাড়াও নিরাপদ রাত জাপন করার লক্ষ্যে জনকোলাহল মুখর পরিবেশ এদের কাছে পছন্দনীয়। আধুনিক সভ্যতার স্বর্ণযুগে বিপন্ন মানবতার রাজপথে আশ্রয় নেওয়া এসব পাগল-পাগলীদের দুরাবস্থা ও করুণ পরিণতির বাস্তব প্রতিচ্ছবি ক্যামেরাবন্দি করা হয়। তবে তাদের স্মৃতি শক্তি না থাকায় পরিচয়, নাম ও ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি। পাগল-পাগলীরা মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেহে ধারন করে অবাধ চলাচল করছে বলেও অনেকেরই ধারণা। কেননা, এসব মানসিক ভারসাম্যহীন পাগলদের মধ্যে নেই স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। এদের চলার গতি অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। অনেক সময় হোটেলের নোংরা পঁচা খাদ্য খেয়ে বেঁচে থাকে এরা। ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এসব মানসিক ভারসাম্যহীন বিকৃত মস্তিষ্কসম্পন্ন নারী ও পুরুষরা। মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী এরা। সুচিকিৎসার অভাবে মরণব্যাধির ছোঁবলে আক্রান্ত হয়ে অকালে হারিয়ে যায় এসব হতভাগ্য পাগল-পাগলীরা। এদেরকে সুচিকিৎসার আওতায় আনার প্রয়োজন। বহিরাগত এসব পাগল-পাগলীদের মধ্যে রয়েছে মধ্য বয়সী যুবক, বৃদ্ধ ও উঠতি বয়সের যুবতী নারীরা। এসব যুবতী পাগলীরাও হচ্ছে যৌন লালসার শিকার। এক শ্রেণির নারীলোলুপ কামান্ধ লোকদের যৌন প্রবৃত্তির শিকারে পড়ে অন্তঃস্বত্তা হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব যুবতী পাগলীদের ওপর যৌনখাদকদের গোপনে অমানবিক নির্যাতন করার অভিযোগও রয়েছে। বন্দর এলাকায় অবস্থানরত পাগল-পাগলীদের মধ্যে নারী পাগলীর সংখ্যা অধিক। অভুক্ত পেটের ক্ষুধা মিটাতে এরা অনেক সময় চলে আসে বন্দর এলাকার হোটেল ও চায়ের দোকানের সামনে। নির্বাক অবস্থায় দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকে হোটেল ও চা দোকানীদের মুখের দিকে। হোটেল, চা ও মুদী দোকানীদের নিকট থেকে সামান্য খাদ্য পেলেই তারা খুব খুশী। খাদ্য পেয়ে তারা চলে যায় তাদের থাকার গন্তব্যস্থলে। তবে বন্দরে অবস্থানরত পাগল-পাগলীদের সম্পর্কে জানতে চাইলে ভোমরা দক্ষিণ গাজী পাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল হাসান জানান, কোনো পাগল-পাগলীদের দেখে ব্যাঙ্গ-বিদ্রæপ ও উপহাস করা যাবে না। কেননা মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছে আল্লাহ। এমন অনেক পাগল রয়েছেন, যারা গোপনে নির্জনে বসে ¯্রষ্টার ধ্যানে মশগুল থাকে। এদিকে এসব অসহায় মানসিক ভারসাম্যহীন পাগল-পাগলীদের করোনার টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আনা জরুরী প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

 

 

 

 

 

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন