প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২১
স্টাফ রিপোর্টার: বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ এলাকা। বর্ষা মৌসুমে ধীরগতির ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান থাকায় সাইড ও সংযোগ সড়কে বৃষ্টির পানি জমে চরম দুর্ভোগে পড়ছে নগরবাসী।
গত বছর খানজাহান আলী সড়ক, কেডিএ এভিনিউ, যশোর রোড ও মজিদ সরণি সংস্কার করে উঁচু করা হয়েছে। আগে এসব সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই হাটু সমান পানি জমে যেতো। এখন আর পানি জমে না। তবে এ চারটি সড়ক বাদে নগরীর অধিকাংশ সংযোগ সড়কে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকছে।
এর মধ্যে শান্তিধাম মোড়, রয়্যাল মোড় ও টুটপাড়া, হাজী মহসিন রোড, আহসান আহমেদ রোড, বিআইডিসি রোডের আলমনগর অংশে বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে নৌকা চলাচলের উপযোগী হয়ে যায়।
খালিশপুর হাউজিং পুরাতন ও নতুন কলোনির অপরিকল্পিত রাস্তা ও ড্রেনগুলো বছরের পর বছর সংস্কার ও পরিষ্কার না করায় বৃষ্টি হলেই ড্রেনের পানি উপচে বাসিন্দাদের ঘরে প্রবেশ করে। আহসান আহম্মেদ রোড, শামসুর রহমান রোড, টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোড, বিআইডিসি রোড, শেখপাড়া গোবরচাকা, সোনাডাঙ্গা আবাসিক, মুজগুন্নি আবাসিক, নিরালা, গল্লামারি ও খালিশপুর দৌলতপুর এলাকার সব সড়কেই পানি জমছে।
সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে নতুন রাস্তা পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার মুজগুন্নী মহাসড়কটির সর্বশেষ সংস্কার হয় ২০১২ সালে। এ সড়কের পুরোটাই খানাখন্দে ভরা। বৃষ্টি হলেই এ সড়কে হাঁটুপানি জমে। এরপাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করে তবেই রাস্তা সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী খান।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয় ২০১৮ সালের জুলাইয়ে। প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের অক্টোবরে। বর্তমানে নগরীর চারটি ওয়ার্ডে ১৩টি ড্রেনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ছয়টি ড্রেন নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে তিন সপ্তাহ আগে। দুটি ড্রেন নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে অনাপত্তিপত্র দেয়া হয়েছে। এসব নির্মাণ কাজে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ৪২ কোটি টাকা। এছাড়া আরও ১১টি ড্রেন পুনঃনির্মাণের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নগরীর টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা আকতার হোসেন জানান, এ সড়কটির পাশের ড্রেনের কাজ শুরু হয় ছয় মাস আগে। সেই থেকে সড়কটি দিয়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময় লাগার কারণে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
একই দাবি করেছেন আহসান আহম্মেদ রোডের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ২৬ জুনের মধ্যে ঠিকাদারের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এটি নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। একপাশে ড্রেন নির্মাণ হলেও অন্য পাশের কাজ অর্ধেকও শেষ হয়নি। ড্রেন নির্মাণের ঠিকাদারের ধীরগতির কারণে এ সড়ক দিয়ে মানুষের চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। দুই পাশে নির্মাণ সামগ্রী ও মালামাল রাখায় মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না। বৃষ্টির পানিতে ড্রেনের ময়লা চলে আসছে সড়কে।
এছাড়াও নগরীর ট্যাংক রোড ও বড় বাজার ক্লে রোড দিয়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে। নির্মাণের ধীরগতিতে বৃষ্টির পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়ছে রাস্তা। বৃষ্টির পানি দেরিতে নামায় সড়কের কার্পেটিং দ্রুত উঠে যাচ্ছে।
এবিষয় জানতে প্রকল্প পরিচালক কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী এজাজ মোর্শেদ চৌধুরীর অফিসে দুদিন গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। যোগাযোগ করা হলে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি।
কেসিসির কনজারভেন্সি কর্মকর্তা আবদুল আজিজ বলেন, করোনার কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজে একটু ধীরে হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ ড্রেন পরিষ্কার করে দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি হলে পানি সরতে সময় লাগবে না।