প্রকাশিত: মে ৬, ২০২২
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ২০১৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত শ’তিনেক আলোচিত-সমালোচিত অভিযান পরিচালনা করেছেন। আধা পাকা আম, মাছ, শিশুখাদ্য, নকল প্রসাধনী থেকে ক্যাসিনো অভিযান। সবশেষ হাজী সেলিম পুত্র ইরফানের বাসায় সেই আলোচিত অভিযানেও নেতৃত্ব দেন মো. সারওয়ার আলম।
বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব। ফেসবুকে করা মন্তব্যের কারণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে লঘুদণ্ড হিসেবে তিরস্কার করা হয়েছে তাঁকে। গত বছরের মার্চে পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ার পরে ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কথা উল্লেখ করে সারওয়ার আলমকে এ দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গত ২১ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সারওয়ার আলমকে লঘুদণ্ড দেওয়ার সরকারি আদেশে স্বাক্ষর করা হয়। ওই দিন বৃহস্পতিবার থাকায় তা সরকারি দপ্তরে পাঠানো হয় ২৪ এপ্রিল। সেখানে বলা হয়, গত বছরের ৮ মার্চ সারওয়ার আলম নিজের ফেসবুক আইডিতে ‘চাকরিজীবনে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়েছেন তাঁদের বেশির ভাগ চাকরিজীবনে পদে পদে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়েছেন এবং এ দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটাই অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেন।
একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে সরকার ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করার মাধ্যমে তিনি অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ করেছেন। এতে জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। এরপর এ বিষয়ে তদন্ত হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আদেশে বলা হয়, পর্যালোচনায় দেখা যায়, সারওয়ার আলম তাঁর ফেসবুকে আইডিতে সেই মন্তব্যটি করেছেন বলে স্বীকার করেছেন এবং অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাঁকে ‘তিরস্কার’সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
লঘুদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্যের কারণেই এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সারওয়ার আলম নিজের ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চেয়েছেন কি না, এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি ফরিদ উদ্দিন।
২৭ তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা সারওয়ার আলম চাকরিতে যোগ দেন ২০০৮ সালের নভেম্বরে। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁর ফেসবুক আইডিতে সেই স্ট্যাটাসটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।