প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২১
এ কে আজাদ পাইকগাছা (খুলনা): খুলনার পাইকগাছায় এক বিধবা (৩৫) কে গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের তড়িৎ পদক্ষেপে অভিযুক্ত চারজনকেই গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। বুধবার তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এমন নেক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে গত ২৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার কালুয়া দক্ষিণ পাড়ায়।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এজাজ শফী জানান, কালুয়া (দক্ষিণপাড়া) গ্রামের মৃত নিরোধ ঢালীর স্ত্রী রূপসী ঢালীকে মারপিট ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ৪ ব্যক্তি তারই বাড়িতে তাকে গণধর্ষণ করে। এসময় তারা রূপসী ঢালীর বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন, নগদ অর্থসহ ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। পরদিন রূপসী ঢালী অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে পাইকগাছা থানায় মামলা করেন, যার নং ২৬। পুলিশ তাকে উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে পরীক্ষা শেষে গণধর্ষণের প্রমান পাওয়া যায়।
এরপর খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুব হাসান এর নির্দেশনা ও বিশেষ ছক এবং এএসপি (সার্কেল) সাইফুল ইসলামের তত্বাবধায়নে পাইকগাছা থানার ওসি মো. এজাজ শফী ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে নিজেই মামলাটির দায়িত্ব নেন। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এসআই তাকবীর হোসাইন, এসআই অভিজিত বিশ্বাস, এসআই সুকান্ত কর্মকার, কং মাইনুল ও কং তৌফিককে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয় এবং আধুনিক প্রযুক্তি ও কৌশলের সহায়তায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে আজ বুধবার ভোর রাত পর্যন্ত পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শেখ জিয়াদ আলীর ছেলে শেখ অহিদুল ইসলাম ওরফে অহিদ (২৮) ও মৃত ইউসুফ ঢালীর ছেলে ফেরদৌস ঢালী (৫১) এবং পার্শ্ববর্তী কয়রা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মৃত অহিদ আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম ওরফে ওরাকা (২৮), শেখ খলিলুর রহমানের ছেলে শেখ মোনায়েম হোসেনকে (২৪) গ্রেফতার করা হয়।
ওসি এজাজ শফী আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পাইকগাছা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গণধর্ষণ ও ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। শেখ অহিদুল ইসলামের স্বীকারোক্তিতে কয়রায় ভাগবা খাল থেকে ভোরে রূপসী ঢালীর লুন্ঠিত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার তারা পাইকগাছার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। গ্রেফতারকৃতদের সহযোগীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুলিশ তড়িৎ পদক্ষেপ না নিলে এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের আশংকা ছিল। সাধারণ মানুষের মাঝে গণধর্ষণের ঘটনায় আতংকের সৃষ্টি হয়েছিল। আসামিদের গ্রেফতারের পর এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।