২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,রাত ১১:৪১

পাইকগাছায় ইউএনও’র মহানুভবতা; কর্মসংস্থান গড়ে দিলেন প্রতিবন্ধী জাফরকে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০

  • শেয়ার করুন

এ কে আজাদ, পাইকগাছাঃ খুলনার পাইকগাছায় এবার এক প্রতিবন্ধী জাফরকে তার কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মানবিক নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। সোমবার তিনি স্থানীয় আগড়ঘাটা বাজারে প্রতিবন্ধী জাফরকে কর্মসংস্থানের (চা’য়ের দোকান) ব্যবস্থা করে দিয়ে সেটির উদ্বোধন করেন।

জানাগেছে, পাইকগাছা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত বিরাশী গ্রাম। সেখানেই পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন জাফর মোড়ল (২৪) নামের এক প্রতিবন্ধী যুবক। সংসারে মা, বাবা, এক ভাই, স্ত্রী ও ৬ বছরের এক সন্তান নিয়ে ভালই চলছিল। পরিবারের সদস্যদের কেউ ইটেরভাটা, ঘের ও অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। হঠাৎ এক সড়ক দুর্ঘটনায় থমকে যায় জীবনযাত্রা। সড়ক দুর্ঘটনায় জাফরকে তাঁর হারাতে হলডান পা।

এমতাবস্থায় যেটুকু সঞ্চয় ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা হয়নি। সর্বশেষ জমিজমা বিক্রী ও ধারদেনার টাকায় চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করেন অসহায় পরিবার।

এরপর শুরু হয় প্রতিবন্ধীতা নিয়ে জাফরের জীবন যুদ্ধের নতুন সূচনা। কি করবে এখন ? একপ্রকার ভবঘুরের মত একে অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে লাগলেন।
অসহায় প্রতিবন্ধী জাফরের সাহার্য্যে সমাজে কেউ তখন এগিয়ে আসেনি। দারিদ্র্যের কর্ষাঘাতে জীবন সংসারে জর্জরিত হয়ে একবছর হল ৬বছরের সন্তানকে রেখে চলে গেছে তার স্ত্রী।

এরপর কি করবে ভেবে কূল কিনারা পাচ্ছিলনা সে। একদিন এক চায়ের দোকানে ইউএন’র গল্প শোনেন নতুন ইউএনও খুব ভাল মানুষ। প্রতিবন্ধী জাফর ভয়ে ভয়ে একদিন মনে সাহস নিয়ে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন এর কার্যালয়ে। দেখা করেন তাঁর সাথে। বর্ণনা দেন নিজের করুন কাহিনীর। শত ব্যস্ততার মাঝেও জাফরের জীবনের ঘটে যাওয়া বাস্তবত কাহিনী শুনেন নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রতিবন্ধী জাফর ইচ্ছা প্রকাশ করে আর্জি জানালেন একটি কর্ম সংস্থানের।

তিনি জাফরের জন্য কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিলেন। আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হতে ৭ হাজার টাকা ঋণ এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে ৮ হাজার টাকা মোট ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কর্মসংস্থান গড়ার লক্ষে আগড়ঘাটা বাজারে একটি চা’য়ের দোকান করে দেন।

সোমবার সকালে আগড়ঘাটা বাজারে জাফরের জন্য গ্যাসের চুলা, সিলেন্ডার, কেটলি, কাপ-পিরিচ, চেয়ার, বেঞ্চিসহ প্রয়োজনীয় মালা-মাল নিয়ে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। আগড়ঘাটা বাজারের সরকারী চাঁদনীতে স্থান নির্ধারণ করে সেখানে দোকান ঘর হস্তান্তর করেন তিনি। এ ঘটনার পর এলাকার মানুষের মাঝে প্রশংসিত হন তিনি। এক অনন্য মানবিক দৃষ্টান্ত রাখলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন