২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,রাত ১:১৮

নিরাপদ জীবন ব্যবস্থায় ভোমরা বন্দর সড়ক যানজটমুক্ত ট্রাকচালকরা উৎফুল্ল

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২১

  • শেয়ার করুন

এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া, ভোমরা(সাতক্ষীরা): সাতক্ষীরার গনমানুষের অর্থনৈতিক ভাগ্য
উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র ভোমরা স্থলবন্দর সড়ক এখন যানজটে মৃত্যুজট। যানজটের কুফলে শারিরীক ও
সামাজিক দুরত্ব বজায় না থাকায় ভয়াবহরুপে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমন। দুর্বিষহ
যানজটের কবলে পড়ে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের শিকার হচ্ছে সাধারন মানুষ। জীবন জীবিকা
নির্বাহের তাগিদে বিভীষীকাময় যানজটের সঙ্গে সংগ্রাম করে যাচ্ছে সাধারন শ্রমিকসহ
বিভিন্ন কর্মজীবি মানুষ। এ বন্দরে যানজটে জনজট এরপর মৃত্যুজট এমন ভয়ঙ্কর পরিবেশে
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে সাধারন মানুষ ও শ্রমিকরা। বর্তমান ভোমরা স্থলবন্দর গতিময়,
যান্ত্রিক ও গতিশীল। এ গতিময় স্থলবন্দর ভোমরার উন্নতি অনেকাংশে নির্ভর করছে যানজটমুক্ত
সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। সুষ্ঠু স্থল যোগাযোগ ব্যবস্থায় যাতায়াত ও মালামাল আনা
নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টিতে ভোমরা বন্দরের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে
সীমাহীন যানজট স্থলবন্দর ভোমরার সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা সামগ্রী অগ্রযাত্রাকে
ব্যহত করে। এ বন্দর সড়কে পথচারীর জন্য নেই প্রয়োজনীয় ফুটপাত, নেই কোনো ট্রাফিক ও
নিরাপত্তা আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ। রয়েছে দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালকের অপ্রতুলতা, সড়ক
সরুকরন ও নিন্মমানের রাস্তা, দ্রæত ও আগে যাওয়ার জন্য ওভারটেকিং এর অসম প্রতিযোগিতার
ফলে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। এছাড়া এ বন্দরে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বন্যার বেগে ছুটে
আসা মানুষ আর যানবাহনের ভিড় মিলে যেন তীল ঠাঁই আর নাহিরে অবস্থার উপক্রম হয়েছে।
অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও যানজট নিরসনে নেই কোনো
ফলপ্রসু উদ্যোগ। ভোমরার লোকসংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। জনসাধারনের যাতায়াতের জন্য দরকার
২৫ শতাংশ ফুটপাত। কিন্তু এখনো পূর্বের অবস্থান রয়ে গেছে অবৈধ দখলে। যেটুকু পথ আছে
তাতেও বারো মাস চলে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। হোটেল-রেঁস্তোরা ও ভাসমান ফেরিওয়ালাদের দখলে
রয়েছে রাস্তার সিংহভাগ। ফলে সর্বক্ষন যানজট লেগেই আছে। অফিস বা অন্য কোনো কারণে ঘর
থেকে কেউ বের হলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবে কিনা তা নিশ্চিত করে কেউ
বলতে পারে না। ইউএনডিপি পরিচালিত এক আঞ্চলিক সমীক্ষায় জানা যায়, শুধু ভোমরা বন্দর
সড়কের যানজটের কারণে যে সময়ের অপচয় হয়, তাতে প্রতিবছর প্রায় ৫০ কোটি টাকা অপচয়

হয়। দীর্ঘ যানজটের কারণে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকান্ড বাঁধাগ্রস্থসহ উৎপাদনশীলতায়
প্রতিদিন শত শত শ্রমঘন্টা বিনষ্ট হচ্ছে। ফলে চাপ পড়ছে জাতীয় অর্থনীতিতে। এছাড়া
যানজটের কারণে যানবাহন ও পরিবহনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত হাজার হাজার টাকার জ¦ালানী
পুড়ছে। এজন্য প্রতিবছর অতিরিক্ত জলানী ক্রয়বাবদ কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা
জাতীয় কোষাগার থেকে বের হয়ে যায়। তাছাড়া যানজটের কারণে যাতায়াত ব্যবস্থায় যে বিঘœ
ঘটে তাতে মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায় চরম পর্যায়ে। যানজটে মূমুর্ষু রোগীসহ অসংখ্য
মানুষ বিভিন্ন প্রকার অসুবিধা ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। অন্তহীন যানজটযুক্ত সমস্যা
সমাধানে এবং পরিবেশ বান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টিতে যানজটমুক্ত নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থায় সুষ্ঠু
জীবনযাত্রা নির্বাহ জাতির বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় সংকল্প নিয়ে কাজ করছে
নবগঠিত ভোমরা বন্দর যানজট নিরসন কমিটি। এই কমিটির প্রায় ৩৫ জন কর্মী নিরলসভাবে
যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। বন্দর যানজট নিরসন কমিটির উদ্যোক্তা আনারুল ইসলাম
গাজী জানান, ভোমরা বন্দরকে যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে কর্মীরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। ফলে বন্দর
সড়ক এখন অনেকটা যানজটমুক্ত। আরেকজন উদ্যোক্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, ভোমরা বন্দর
সড়কটি পূর্বে ছিল যানজটযুক্ত। বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমনের প্রাদুর্ভাব
থেকে রক্ষার জন্যে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থায় বন্দরের পরিত্যক্ত জায়গায় একটি ট্রাক পার্কিং
ইয়ার্ড সাময়িকভাবে তৈরী করা হয়েছে। সড়কে যানজট মুক্ত থাকার লক্ষ্যে এই পার্কিং
ইয়ার্ডের অভ্যন্তরে বাংলাদেশ-ভারতের খালি গাড়ী রাখা হয়। বর্তমানে ভোমরা বন্দর সড়কটি
যানজটমুক্ত থাকায় উপকারভোগীরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। বন্দর সড়ক যানজটমুক্ত প্রক্রিয়ার
বিরুদ্ধে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র চালালেও স্থানীয় জনগন ও গাড়িচালকদের তোপের মুখে ভেস্তে
যায় তাদের ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন