প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২৫
চট্টগ্রাম, ১৫ এপ্রিল ২০২৫ঃ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মায়ানমারে তৃতীয় ধাপে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা হস্তান্তর শেষে আজ মঙ্গলবার দেশে প্রত্যাবর্তন করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’। ইতিপূর্বে বাংলাদেশ হতে মায়ানমারে প্রেরিত ৫৫ সদস্যের উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল এবং বিভিন্ন সময়ে মায়ানমারে আটকে পড়া ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে জাহাজটি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে।
প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারে ১২০ টন ত্রাণসামগ্রী যথাযথ প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর শেষে ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে গত ১৩ এপ্রিল মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন বন্দর ত্যাগ করে। এর আগে মায়ানমারে প্রেরিত উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করে জাহাজে আরোহন করে। গত ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল ২০২৫ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, অসামরিক চিকিৎসক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সমন্বয়ে গঠিত ৫৫ সদস্যের উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল মায়ানমারে প্রেরণ করা হয়। তারা ধসে পড়া ভবন ক্লিয়ারিং, উদ্ধার এবং জটিল অস্ত্র পাচারসহ দুর্যোগপীড়িত মানুষের সেবায় কাজ করে। বর্তমানে মায়ানমারে ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় নৌবাহিনীর জাহাজযোগে তাদের নিরাপদে দেশে নিয়ে আসা হয়। মানবিক বিপর্যয়ে প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় সে দেশের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
উলেখ্য, বিভিন্ন সময়ে মায়ানমারে আটক থাকা ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’ জাহাজ এর মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। তারা প্রায় ০২ বছর যাবৎ মানব পাচারের শিকার হয় মায়ানমারে আটক ছিল। জানা যায়, উন্নত রাষ্ট্রে প্রেরণ ও চাকরির প্রলোভনে পাচারকারী চক্রের কবলে পড়ে তারা মায়ানমারে গমন করে।
অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটককৃত আঠারো বছরের কম বয়সী তরুণদের কিশোর সংশোধনাগারে রাখা হয়। আটক হওয়ার পর থেকেই তাদের প্রত্যাবাসনে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে। এমতাবস্থায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী মায়ানমারে পৌঁছালে আটককৃত নাগরিকদের প্রত্যাবাসন আলোচনায় ইতিবাচক সাড়া মেলে। সেখানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী মায়ানমারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। এপ্রেক্ষিতে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যকার আলোচনায় দুই দেশ সমঝোতায় উপনীত হয়। ফলে দীর্ঘ দিন আটক থাকা বাংলাদেশি নাগরিকরা মুক্তি পায়।
বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং বাংলাদেশ ও মায়ানমার সরকারের পারস্পরিক সহযোগিতায় প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় মুক্তিপ্রাপ্ত নাগরিকদের আজ নিরাপদে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত কার্যক্রম শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হস্তান্তর করা হবে।