২৬শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,রাত ৮:১৪

শিরোনাম
খুলনায় ‘তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত ব্যাংকিং সেক্টরে এস আলমের একচ্ছত্র নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠাসহ ৫ দফা দাবিতে খুলনায় সংবাদ সম্মেলন খুলনার তেরখাদায় নৌবাহিনীর অভিযানে অবৈধ কারেন্ট জাল ও চায়না দোয়ারী জাল আটক খুলনা মহানগরীর ১ ও ২৫নং ওয়ার্ডকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা খুলনায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর পূনঃ সবুজায়ন কার্যক্রম উদযাপন এবং সমন্বিত সবুজ বিদ্যালয় ঘোষণা অনুষ্ঠিত মারধরের মামলায় খুলনা জেলা কারাগারে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টী সত্যানন্দ দত্ত নতুন করারোপ ছাড়া কেসিসির ৭১৯ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা অশ্রুসিক্ত হৃদয়ে খুলনায় পালিত হলো ইমাম হুসাইন (আ.)’র পবিত্র চেহলাম

তামাক কোম্পানির অপতৎপরতা রুখতে আইন শক্তিশালী করা জুরুরি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

খবর বিজ্ঞপ্তির : বিদ্যমান তামাক নিয়ণ্ত্রণ আইনের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলো নিত্যনতুন কৌশলে তাদের পণ্যের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, বিভ্রান্তিকর তথ্যের মাধ্যমে তামাকের কর বৃদ্ধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গেও বেপরোয়া বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো। তাই, কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইনকে শক্তিশালী করা জরুরি।

আজ ২৬ নভেম্বর ২০২৫, সকাকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের “তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া” হলে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে “আইনের সীমাবদ্ধতা: সুযোগ নিচ্ছে তামাক কোম্পানি” শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আলোচকগণ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। এতে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপের তথ্য তুলে বিষয়ে বিগত তিন মাস অনুসন্ধান করেন ঢাকা ট্রিবিউন ও বাংলা ট্রিবিউনের খুলনার প্রতিনিধি মোঃ হেদায়েৎ হোসেন মোল্লা এবং সারাবাংলা ডটনেট এর সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট এমদাদুল হক তুহিন। প্রতিবেদনে তরূনদেরকে সিগারেটে আসক্ত করতে সিগারেট কোম্পানিগুলোর আইন লংঘন এবং নীতিতে হস্তক্ষেপের তথ্য উঠে এসেছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের পক্ষ থেকে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে শক্তিশালী করার আহবান জানানো হয়।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ, আইনজীবী এবং নীতি বিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, এইড ফাউন্ডেশন প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, টিসিআরসি এর সদস্য সচিব মো. বজলুর রহমান।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, তরূণদেরকে আকৃষ্ট করতে তামাক কোম্পানিগুলো সকল মূল্যস্তরেই বিভিন্ন ফ্লেভারের সিগারেট বাজারে এনেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ সিগারেটের মতোই এই ফ্লেভারযুক্ত সিগারেট শ্বাসতন্ত্রের ক্যান্সারের একটি বড় কারণ। এই সিগারেটে ব্যবহৃত সিনথেটিক মেনথল ফুসফুসের অ্যালার্জি, টনসিল ফোলাসহ দীর্ঘস্থায়ী অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের সম্ভাবনা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া, এসকল সিগারেটে ব্যবহৃত আপেল, স্ট্রবেরি ও চকলেট স্বাদের সুগন্ধি শীতল অনুভূতি জাগানোর কারণে আরও গভীরভাবে শ্বাস নিতে উৎসাহিত করে। ফলে শরীরে বিষাক্ত রাসায়নিক ও আলকাতরা বেশি পরিমাণে প্রবেশ করে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এই সিগারেটের জনপ্রীয়তা বাড়ছে যা খুবই উদ্বেগজনক। প্রতিবেদনের সুপারিশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার প্রক্রিয়ায় ফ্লেভার সিগারেটকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করা জরুরি বলে অবহিত করা হয়।

অপর প্রতিবেদনে উঠে আসে, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দৃর্বল হওয়ায় বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলো শিক্ষার্থী ও তরুণদের টার্গেট করে চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। দেখা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত, ৩৪ মাসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে খুলনায় মাত্র ৫০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছে মাত্র ৬১ জনকে। অথচ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৩১ মাসে ৮০১ জনকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগে দুর্বলতা, নিয়মিত অভিযান পরিচালিত না হওয়া আকর্ষণীয় প্যাকেজিং, সহজলভ্যতা এবং চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তরুণদেরকে ধূমপানে আকৃষ্ট করে তুলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে বা শিক্ষার্থীরা বেশি যাতায়াত করে এমন জায়গাগুলোতে গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছে, যা অপ্রাপ্তবয়ষ্কদেরকে ধূমপানের প্রতি কৌতুহলী করে তুলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় নগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে গড়ে তোলা হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির স্থান। এ প্রতিবেদনে তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স কমিটির সভা নিয়মিতকরণ, জরিমানা ও শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্র নিষিদ্ধের বিধান আইনে সম্পৃক্ত করা জরুরি বলে অভিমত জানানো হয়।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন