২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,দুপুর ২:১৪

ট্রাম্প আক্রান্ত: দেশ পরিচালনায় অক্ষম হয়ে পড়লে কী ঘটতে পারে?

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২০

  • শেয়ার করুন

করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে যে বয়সের মানুষদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, ৭৪ বছর বয়সী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সেই কাতারে পড়েন। তিনি দেশ পরিচালনায় অক্ষম হয়ে পড়লে কী ঘটতে পারে?

ট্রাম্প যদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সেক্ষেত্রে কী হতে পারে তা নিয়ে হোয়াইট হাউজের কয়েকজন সাবেক উপদেষ্টার সঙ্গে কিছুদিন আগে কথা বলেছে ব্লুমবার্গ নিউজ।

তাদের একজন হোয়াইট হাউজের সাবেক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ডেভিড অ্যাক্সোরড বলেছেন, সব কিছুর জন্যই সেখানে একটি নিয়ম (প্রটোকল) আছে।

“যদি সন্ত্রাসী বা পরমাণু হামলা হয় তবে কী করতে হবে হোয়াইট হাউজে নিয়মিত তার অনুশীলন চলে। তবে সত্যি বলতে, বর্তমান মহামারীর মত পরিস্থিতি, যেটা হোয়াইট হাউজকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে সেটা কখনোই প্রত্যাশিত ছিল না।”

ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হোপ হিক্সের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া। বৃহস্পতিবার রাতে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে) এক টুইটে ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, তাদের সেই পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ এসেছে।

সিএনএন লিখেছে, কয়েক দশকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের এরকম গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র এক মাস আগে ট্রাম্পের এই অসুস্থতা নতুন সঙ্কটের ঝুঁকি তৈরি করেছে।

গত মার্চের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ৭ এপ্রিল তাকে আইসিইউতে নিতে হয়। তার আগে তিনি সরকার পরিচালনার কিছু দায়িত্ব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের হাতে দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের বেলাও এখনও সে রকম কোনো ঘোষণা আসেনি।

এ বিষয়ে ইউরেশিয়া গ্রুপের প্রধান ইয়ান ব্রেমার বলেন, “যদি ট্রাম্প অসুস্থতার কারণে সরকার পরিচালনায় ‍অক্ষম হয়ে পড়েন সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি ‍অস্থায়ীভাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারবেন এবং কাজে ফেরার মত সুস্থ হয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিতেও পারবেন।”

চিকিৎসার প্রয়োজনে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ দুইবার এভাবে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছিলেন। এছাড়া, অস্ত্রোপচারের কারণে আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানও একবার ভাইস প্রেসিডেন্টের হাতে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছিলেন।

যদি ট্রাম্পের বেলায় জরুরি প্রয়োজনে এমন কিছু করতে হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভা দায়িত্ব হস্তান্তরের উদ্যোগ নিতে পারবে।

এমনকি যদি প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট দুজনেও যদি কোনো কারণে মারা যান বা একসঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনায় অক্ষম হয়ে পড়েন সেক্ষেত্রে কী করতে হবে তাও সংবিধানে বলা আছে।

জর্জ মাসন ইউনিভারর্সিটির আইনের অধ্যাপক ইলিয়া সমিন বলেন, “এমনকি এই পরিস্থিতিতেও কার হাতে ক্ষমতা যাবে সেটা সংবিধানে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। এরকম হলে হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ক্ষমতা গ্রহণ করবেন।”

পরিস্থিতি যদি তেমনই হয় এবং বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ন্যান্সি পেলোসিকে যদি ক্ষমতা গ্রহণ করতে হয় তবে আইনে যতই সেই ব্যবস্থার কথা উল্লেখ থাকুক, ‘বিশৃঙ্খলা নিশ্চিত’ বলে সতর্ক করছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন