২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,দুপুর ১২:৩৬

শিরোনাম

টাঙ্গাইল পৌর নির্বাচন: মনোনয়ন দৌঁড়ে এগিয়ে এম.এ রৌফ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৬, ২০২০

  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ গোছাতে ভোটারদের কাছে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের সেরাটা তুলে ধরছেন প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রায় হাফ ডজন প্রার্থীর মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ রৌফ। আগামী ৩০ জানুয়ারি দেশের ৬৪টি পৌরসভার সঙ্গে এই পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন মনোনয়ন নির্ধারনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনী আমেজ জমজমাট হয়ে উঠছে পুরো টাঙ্গাইল জুড়ে। চায়ের দোকান থেকে শুরু সকল শ্রেনী পেশার মানুষের মধ্যে শুধু একটাই আলোচনা কে হচ্ছেন টাঙ্গাইলের নৌকার কান্ডারী?

 (কোভিড-১৯) করোনা মহামারিতে টাঙ্গাইল পৌরসভার খেটে খাওয়া অসহায় ও কর্মহীন মানুষদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন এম.এ রৌফ। শুধু মহামারীকালে নয়। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সেচ্ছাসেবামূলক সকল কাজে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। তাই পৌরবাসীর সুখে দুঃখে সবসময় যিনি পাশে থেকেছেন এবং আগামীতেও থাকবেন এমন মানুষকে নৌকা প্রার্থী হিসেবে চান তৃণমূলের নেতাকর্মী ও ভোটাররা। এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের ব্যাপক জনপ্রিয়তা, আস্থা এবং ভালোবাসা অর্জন করেছেন রৌফ। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে চরম নির্যাতিত এই নেতার হাতে নৌকার বৈঠা দেখতে চান, এমন নেতাকর্মীও অজস্র। সবমিলিয়ে নতুন নেতৃত্বের প্রতি মনযোগী ভোটাররা।

কে এই রৌফ?
-টাঙ্গাইলবাসীর কাছে সুপরিচিত ও বহুল আলোচিত নাম এম.এ রৌফ। এম.এ রৌফের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে অর্জন ও সাফল্য এসেছে অক্লান্ত পরিশ্রম, দৃঢ়চিত্ততা ও কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে। এম.এ রৌফ তাঁর জীবনের সিংহভাগ সময় ব্যায় করেছেন টাঙ্গাইলে অসংখ্য রাজনৈতিক ঘটনাবলির প্রত্যক্ষ নায়ক অথবা প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে। ছাত্রজীবন থেকে শুরু হয় এম.এ রৌফের রাজনৈতিক পদযাত্রা। দায়িত্বপালন করেছেন টাঙ্গাইল শহর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদকসহ একাধারে সরকারি এম এম আলী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি এবং টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে। যোগ্য নেতৃত্ব আর পরিশ্রমী রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তাকে পরবর্তীতে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পদাসিন করে। এছাড়াও দীর্ঘ নয় বছর যাবৎ বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির, টাঙ্গাইল ইউনিটের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আপাদমস্তক এই রাজনীতিক রাজনৈতিক, সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ প্রায় ২০টি সামাজিক সংগঠনের বিভিন্ন পদে থেকে প্রতিষ্ঠানকে সুসংগঠিত করছেন।

১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং কর্মীবাহিনীকে নিজ বাড়িতে জায়গা করে দিয়েছিলেন এম.এ রৌফ। ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ঘোষিত সকল আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং টাঙ্গাইলে জনতার মঞ্চ বানানোসহ ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলেন।

জননেত্রী শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগ সরকার পাঁচ বৎসর দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালার পর যখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের এক ঘণ্টার মধ্যেই টাঙ্গাইলের পুলিশ বাহিনীর হাতে আটক হন এম.এ রৌফ। আটকের পর তাকে অমানবিক নির্যাতন করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। সে সময় টানা দুই মাস কারাবাস করতে হয় তাকে। ২০০১ সালে ভি.পি থাকাকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট ঈর্ষান্বিত হয়ে সরকারি এম.এম আলী কলেজ ছাত্র সংসদ ভেঙে সবকিছু লুট করে এবং পরে কলেজ প্রশাসন সিলগালা করে দেয়। বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকবার গ্রেফতার ও শারীরিকভাবে অত্যাচারের শিকার হয়ে আজও তার বাম পা অচলপ্রায়। জোট সরকারের সময় অপারেশন ক্লিন হার্ট পরিচালনাকালীন যৌথ বাহিনী রৌফকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করে। তাকে না পেয়ে একাধিকবার তার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে এবং ছোট ভাইকে ধরে নিয়ে যায়।

২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্তৃক ছাত্র সমাবেশে নারকীয় তান্ডব চালিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে হত্যার ঘোষণা দেয় তখন এম.এ রৌফ টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। ওই সময় টাঙ্গাইল জজকোর্টে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির আহবায়ক, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী পরিবারের সদস্য সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ১২ জন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলা আমলে নিয়ে সকল আসামীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন আদালত। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মামলা দায়ের করায় টাঙ্গাইলে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ রৌফের বিরুদ্ধে মিছিল, সমাবেশ হয় এবং কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। ১/১১ এর সময় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে সর্বপ্রথম প্রথম মিছিল বের করেন। যার ফলে তাকে পুলিশি নির্যাতন সহ্য করতে হয়।

২০০৭ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পদত্যাগের দাবিতে টাঙ্গাইলে আন্দোলন করায় অমানসিক শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে হয় তাকে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর সারা বাংলাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, খুন, ধর্ষণ, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখল, জামায়াত-শিবিরের আস্ফালনের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলনসহ ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে হাজার হাজার ছাত্র নিয়ে টাঙ্গাইলের রাজপথে মিছিল-সমাবেশসহ বিভিন্ন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সম্মিলিত পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ কনভেনশনে টাঙ্গাইল জেলায় বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক সকল নির্যাতনের তালিকা তৈরি করে কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেয়াসহ ১৯৯০-২০১৯ সাল পর্যন্ত যতগুলো জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে দলীয় প্রার্থী বা নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার প্রশ্নে কোন অপশক্তির সঙ্গে আপোষ করেননি তিনি। বরং দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন সবসময়।

আসন্ন টাঙ্গাইল পৌরসভা নির্বাচনে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে জনসমর্থনে অনন্য উচ্চতায় রয়েছেন এম এ রৌফ।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন