২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,সন্ধ্যা ৭:১২

জয়ের প্রান্তে জো বাইডেন, তাঁর জীবনী, রাজনৈতিক সফর ও ব্যক্তিগত জীবন একনজরে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২০

  • শেয়ার করুন

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে (USA Presiential Elections)তখত জয়ের প্রান্তে জো বাইডেন। মার্কিন নির্বাচনে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা দখল নিয়ে ট্রাম্প-বাইডেনের মধ্যে তুমুল ভোটের লড়াই চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে বাইডেনের দরকার আর ৬ ইলেকটোরাল ভোট। অপর দিকে ট্রাম্পের প্রয়োজন আরও ৫৬ ভোট। ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনের ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা বেড়ে ২৬৪টিতে দাঁড়িয়েছে। বিপরীতে ট্রাম্পের অবস্থান ২১৪তে।

সে হিসেবে এখনই মোটামুটি বরা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ি হতে চলেছেন জো বাইডেন। মিশিগান, উইসকনসিনে জিতেছেন জো বাইডেন। অন্যদিকে শুধু নেভাদায় দুই প্রার্থীর ব্যবধান সবচেয়ে কম। ভোট গণনাও বাকি অনেক। সে হিসেবে বলতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কে হবেন সেই ভাগ্য ঝুলে আছে নেভাদায়। মিশিগান, উইসকনসিন ও নেভাদায় জিতলেই বাইডেনের ২৭০ এর কোটা পূর্ণ হবে। মার্কিন শীর্ষ তখতের ভাবি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জীবনী দেখে নেওয়া যাক একনজরে।

জো বাইডেন কে?
জোসেফ রবিনেট জুনিয়ার নামটিতে ছোট করে ‘জো’ হিসাবে তুলে ধরে জো বাইডেন বলা হয়। মার্কিন ড্যামোক্র্যাটিক দলের সদস্য় বাইডেন আমেরিকায় বহুকাল অ্যাটর্নি হিসাহে কর্মরত ছিলেন। এরপর তিনি পা রাখেন রাজনীতিতে। ডেলাওয়ারে তিনি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে সেনেটর ছিলেন। মার্কিন রাজনীতিতে তিনি ৪৭ তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তবে তাঁর রাজনৈতিক সফর আলোচনার আগে , দেখে নেওয়া যাক তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কিছু দিক।

বাইডেনের জন্মসাল
জো বাইডেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর। উত্তরপূর্ব পেনসিলভেনিয়ার স্ক্র্যানটনে তাঁর বড় হয়ে ওঠা। বাবা জোসেফ বাইডেন সিনিয়র ছিলেন ফারনেস ক্লিনার। বহু সময় গাড়ির সেলসম্যান হিসাবেও তিনি কাজ করেছেন। ছোটবেলা থেকেই প্রবল দারিদ্রে বড় হয়েছেন মার্কিন রাজনীতির এই দাপুটে নেতা। আর তাঁর মানসিকতাকে শক্ত পোক্ত করতে বাবা মায়ের অবদান সহ দারিদ্রতাকে তিনি বহুবার ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বহু সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন যে দারিদ্রতা আর কঠিন জীবনযাত্রা তাঁকে পোক্ত মানুষ হিসাবে তৈরি করেছে।

বাইডেনের পড়াশোনা ও শিক্ষা জীবন
স্ক্র্যান্টনে সেন্ট পলস এলিমেন্টরি স্কুলে বাইডেন পড়াশোনা করেন। এরপর বাইডেনের ১৩ বছর বয়সে তিনি ও তাঁর পরিবার ডেলাওয়ারে চলে আসেন। বাচনশক্তিতে বাইডেনের কিছু সমস্যা ছিল ছোটথেকেই। আরতার জন্য স্কুল জীবনে তাঁকে সহপাঠীদের মশকরার পাত্র হতে হয়। তবে এরপর তিনি নিজেকে কীভাবে শুধরে নিয়েছেন তা আজ বিশ্ব দেখছে। তাঁর ভাষণ শুনতে তাবড় মার্কিনিদের ভিড় হচ্ছে সভায়। সেন্ট হেলেনা স্কুল, বার্চমেরে অ্যাকাডেমির পড়ুয়া হিসাবে শিক্ষকদের নজর কাড়েন খুবই রোগা ছিপছিপে কিশোর বাইডেন।

কলেজ জীবন থেকে বিবাহিত জীবন
ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ শেষ করেন বাইডেন। ফুটবলে আগ্রহী বাইডেন এরপর জন এফ কেনেডির রাজনৈতিক গতিবিধিতে আকর্ষিত হয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে ১৯৬১ থেকে রাজনীতির দিকে ঝুঁকতে থাকেন তিনি। এদিকে, রাজনীতির পথে পা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাংর পরিচিতি হয় নেইলিয়া হান্টারের সঙ্গে। এরপর ১৯৬৬ সালে তাঁর বিয়ে হয় নেইলার সঙ্গে।

শুরু রাজনৈতিক জীবন
জোসেফ, হান্টার , নাওমি এই তিন সন্তানের বাবা জো বাইডেন ১৯৬৮ তে একটি ল ফার্মে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭০ সালে নিউ ক্যাসেল কাউন্টি কাউন্সিলে তিনি নির্বাচিত হন। এরপর নিজের ল ফার্ম শুরু করেন তিনি। এরপর মার্কিন সেনেটের লড়াই ড্যামেক্র্যাটদের তরফে। পরিবারের সমর্থন নিয়ে তিনি এই প্রচার অভিযান চালান। এরপর মার্কিন ইতিহাসে পঞ্চম সর্বকনিষ্ঠ সেনেটর হিসাবে নির্বাচিত হন ২৯ বছরের বাইডেন। এরপর ১৯৭৭ সালে ফের একবার বিয়ে করেন বাইডেন। দ্বিতীয় স্ত্রী জিলের ঘর আলো করে কন্যা সন্তান অ্যাশলে জন্মান ১৯৮১ সালে।

রাজনীতিতে বাইডেনের গুরুত্বপূর্ণ বছর
জো বাইডেন ১৯৬৯ সালে অ্যাটর্নি হন, ১৯৭০ সালে কান্ট্রি কাউন্সিলে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৭২ এ প্রথমবার সেনেটে। এরপর পরের পর ১৯৭৮, ১৯৮৪, ১৯৯০, ১৯৯৬, ২০০২ এবং ২০০৮ সালে সেনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন জো। নিজের কার্যকালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ইরাক নিয়ে পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেও ছাড়েননি বাইডেন।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ
২০০৭ সালে বাইডেন ফের একবার মার্কিন তখতের লড়াইতে ভোট যুদ্ধের আঙিনায় নামেন। এর আগে ২০ বছর আগে তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার লড়াইয়ে নেমেও ব্যাকফুটে চলে যান। হিলারি ক্লিন্টনের পোক্ত জমিতে বাইডেন সেবারেও দাঁত ফোটাতে পারেননি। তবে এরপর ফোন আসে স্বয়ং ওবামার কাছ থেকে। ২০০৮ সালের রিপাবলিকান সেনেটার জন ম্যাকেন, ও আলাস্কার গর্ভনর সারাহ পালিনকে হারিয়ে ২০০৯ সালে ২০ জানুয়ারি বাইডেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। এরপর ২০১২ সালেও একই পদ তিনি ধরে রাখেন।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন