প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২১
এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া,ভোমরা(সাতক্ষীরা)ঃ
সড়ক নয় যেন মরন ফাঁদ। আমদানী-রপ্তানী পণ্য দ্রুত সরবরাহে বাঁধাগ্রস্থ ভোমরা বন্দর সড়ক। বর্ষা মৌসুমের আগেই সড়কের ইট, বালি, পিঁচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বর্তমানে প্রাকৃতিক বৈরী আবহাওয়ার বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে সড়কের গর্তগুলো।
ভারী যানবাহন ও জনজীবন চলাচলে প্রতি পদে পদে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে সাধারন মানুষ। আর্থ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ভোমরা বন্দর সড়কটি এখন মরন ফাঁদে পরিণত। জনগুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নীতকরণে জোনভিত্তিক গুচ্ছ প্রকল্পের অংশ হিসাবে স্থলবন্দর ভোমরায় টেকসই ও মানসম্মত আঞ্চলিক মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার ২০২০-২০২১ অর্থবছরে হাতে নিয়েছে বিনির্মান প্রকল্প। আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মানকল্পে বন্দর সড়কের দু’পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে শুরু হয় সড়ক নির্মান খোঁড়াখুড়ির প্রাথমিক কার্যক্রম। নির্মান প্রকল্প কাজের শুরুতে সড়কের উপর খোঁড়ার কাজ চলে ভোমরা জিরোপয়েন্ট এলাকা থেকে গাংনিয়া ব্রীজ পর্যন্ত। কিন্তু করোনা ভাইরাসের মহাদূর্যোগকালে নির্মানের কাজ চলে ধীর গতিতে। এমনকি চলমান কাজ থমকে যায় মাঝপথে। সড়কের দু’পাশে ও মধ্যখানে খোঁড়ার স্থান দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে তৈরী হয় বড় বড় গর্ত। ফলে সড়ক চলাচলে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থা। মূষলধারে বৃষ্টিপাতের পানিতে প্লাবিত হয় সড়কটি। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন সমুদ্রের বিশাল জলরাশি। সাধারন মানুষ ও গাড়ীচালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আনুমানিক দৃষ্টির নীরিক্ষণে যাতায়াত করে। সড়ক অচলাবস্থার কারণে ভারত-বাংলাদেশের ট্রাক ড্রাইভাররা পড়ে মহাবিপদে। এমনকি পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ভারসাম্য হারিয়ে সড়কের উপরে পাল্টি খেয়ে পড়ে। ভাগ্যক্রমে গাড়িচালকরা প্রাণে বাঁচলেও আমদানীকৃত পণ্যগুলো সড়কের উপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ব্যবসায়ীরা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের চরম অবহেলায় ভোমরা বন্দর সড়কটি এখন চলাচলে অনুপযোগী। ভোমরা বন্দরে অবস্থান নেওয়া পঁচনশীল আমদানী পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হ0য় ব্যবসায়ীদের। যথাসময়ে আমদানী পণ্য বাজারজাত না করতে পারায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সুতরাং বর্ষা মৌসুমের আগেই ভোমরা বন্দর সড়কটি সংস্কার বা নির্মানকাজ সম্পন্ন না হলে ভাটা পড়বে আমদানী-রপ্তানী বাণিজ্যে। সরকার হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। এমনকি প্রভাবশালী আমদানী ও রপ্তানী কারক ব্যবসায়ীরা নাজুক যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে ভোমরা বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে দেশের অন্য বন্দর দিয়ে ব্যবসা করতে পারে বলে বন্দরের একাধিক সূত্র আশঙ্কা করছে। বন্দর ব্যবহারকারী কর্তৃপক্ষের ধারণা, টেকসই ও মানসম্মত সড়ক চলাচল ব্যবস্থা উন্নীত হলে দেশের ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দর দিয়ে অনায়াসে ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। কেননা, ভোমরা বন্দর থেকে ভারতের কোলকাতার দূরত্ব কম। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে এ বন্দরে আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে এবং সরকার লক্ষ্যমাত্রার অধিক রাজস্ব অর্জন করতে সক্ষম হবে। আমদানী-রপ্তানী বাণিজ্যের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং রাজস্ব অর্জনের লক্ষ্যে বর্ষা মৌসুমের আগে ভোমরা বন্দর সড়কটি জরুরীভিত্তিতে নির্মান হওয়া দরকার বলে বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ী সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন, ট্রান্সপোর্ট সমিতি এবং ভোমরা স্থল বন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সংগঠন মনে করেন।