প্রকাশিত: মে ৫, ২০২২
ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’মোকাবিলায় সরকারের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি বিষয়ে আয়োজিত সভা শেষে কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা গতকাল জানতে পেরেছি
‘ভারত মহাসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছে একটি সাইক্লোনিক সিস্টেম ডেভেলপ করেছে। যেটা ৯ মের মধ্যে হয়তো লঘুচাপে রূপান্তরিত হবে। এরপর ধীরে ধীরে এটা সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ ধারণ করতে পারে। ১১ মে নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়ে গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি ঘূর্ণিঝড় হয় তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হবে অশনি। এটার ল্যান্ডফলটা এখন পর্যন্ত ক্যালকুলেশন হয়নি। নিম্নচাপ ও ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টির পর বিস্তারিত জানা যাবে ।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশ একটি ঘূর্ণিঝড় প্রবণ দেশ, আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে, ঝড়ে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। যার জন্য আমরা আজকে প্রাথমিক সভা ডেকেছি। এখানে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আলোচনা করেছি। কবে লঘুচাপ, কবে নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটা স্টেপে আমাদের প্রস্তুতি কি, কাদের সংযুক্ত করব, কাদের দায়িত্ব দেবো, কোথায় কীভাবে নির্দেশনা দেবো সেগুলো আমরা আজ ঠিক করেছি। পরবর্তীতে যদি সতর্ক সংকেত দেওয়া হয় তাহলে আমরা একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে নির্দেশনাগুলো মাঠ পর্যায়ে দিয়ে দেবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সিপিপি ভলান্টিয়ারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা উপকূলীয় অঞ্চলে কাজ করছে, আমাদের যে এসওডি আছে সে অনুযায়ী কখন কী করতে হবে জানিয়ে দিয়েছি। সবাই আমরা এখন অ্যালার্ট। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেছেন, আম্পানের সময় ১৪ হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় ২৪ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নেয়। এবারও আমাদের সেই ক্যাপাসিটি আছে। ঘূর্ণিঝড় আসানিও মোকাবিলা করতে পারব।
সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানসহ মন্ত্রণালয় এবং পিপিপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন ।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আন্দামান সাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই লঘুচাপের ফলে সৃষ্টি হতে পারে বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় অশনি, যা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও গতিপথ পরিবর্তনে আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশেও।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুখ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওমর ফারুক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সৃষ্টি হতে যাওয়া লঘুচাপটি পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও বাংলাদেশের দিকে মুখ করে আছে।’
কবে নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘ধারণা করা যাচ্ছে ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে লঘুচাপটি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সৃষ্টি হতে পারে আর লঘুচাপ সৃষ্টি হলে তখন নিশ্চিতভাবে বলা বলা যাবে।’