২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার,রাত ৯:৩০

ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ উপকূল অতিক্রম করছে, আঘাত হানছে না বাংলাদেশে

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২১

  • শেয়ার করুন

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। তবে বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই ইয়াসের। ফলে ঘূর্ণি বাতাসে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তবে ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার কারণে জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল কিছুটা প্লাবিত হতে পারে।

বুধবার (২৬ মে) এসব তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাওছার পারভীন।

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের বাংলাদেশে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নেই। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে উঠে যাচ্ছে। উপকূল অতিক্রম শুরু করছে এটি। আমরা এখন ঘোষণা দেব।’

‘যা ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ওদিকেই (ভারত অংশে) হবে। বাংলাদেশ একটু প্লাবিত হবে, আর কিছু না। পূর্ণিমা আছে, তার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৩-৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারের পানি প্রবাহিত হতে পারে’ উল্লেখ করেন কাওছার পারভীন।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের উপকূলে একটু বাতাস আছে। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় উপকূলে উঠছে। বিকাল নাগাদ একটু বাতাস বাড়বে, কিন্তু ততো বেশি হবে না। বাতাসে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।’

এদিকে, ইয়াস সম্পর্কিত ১৭ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের উত্তর উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।

এটি আজ (২৬ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ইয়াস আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (২৬ মে) দুপুর নাগাদ ডামরার উত্তর এবং বালেশ্বরের দক্ষিণ দিক দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যে ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণ ও ধামড়ার উত্তর দিক দিয়ে অতিক্রম করে যাবে বলেই পূর্বাভাস। তার পর ঘূর্ণিঝড় চলে যাবে ঝাড়খণ্ডের দিকে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোয় এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোয় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বলেও বিশেষ বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,সুপার সাইক্লোন ইয়াস ঘূর্ণিঝড়টি উড়িষ্যার উপকূলে আছড়ে পড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে।সুপার সাইক্লোন ইয়াসের ল্যান্ডফল শুরু হয়ে গেছে। দক্ষিণ বালেশ্বরে ল্যান্ডফল শুরু হয়েছে বলে জানালেন আবহাওয়াবিদ সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইয়াসের তাণ্ডবে সমুদ্রের ভয়াল রূপ দিঘায়! ভেসে গেল গাড়ি-বাড়ি।৫০ বছরের মধ্যেও এমন উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের দেখিনি এলাকাবাসী।

এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ১৫৫ কিলোমিটার।। আগামী ৩ ঘণ্টা ধরে এই প্রক্রিয়া চলবে বলেই জানিয়েছে তারা।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন