প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫
তথ্য প্রতিবেদক:
দীর্ঘ ১৩ মাস বেতন বকেয়া থাকা আউটসোর্সিং কর্মচারীদের খুলনার সিভিল সার্জন কর্তৃক চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মচারীরা নগরীর শামসুর রহমান রোডস্থ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করেছেন। তাদের এ আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে খুলনার ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা অসুস্থ রোগী ও তাদের স্বজনরা।
মানববন্ধনকালে তার অভিযোগ করে বলেন, খুলনার সিভিল সার্জন গত ২৯ জুলাই এক চিঠিতে আউট সোর্সিং কর্মচারীদের চাকরি নেই বিধায় তাদের বেতন দিতে তিনি দায়বদ্ধ নন বলে জানান। খুলনা সদর ও ৯ উপজেলায় ২১৪ জন কর্মচারী ১৩ মাস যাবৎ বিনা বেতনে চাকরি করছেন। তারা নিরলসভাবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহি:বিভাগ, ওয়ার্ড, রান্নাঘরসহ বিভিন্ন স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। তারা যে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন, তার স্বপক্ষে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক মাহফুজের দূর্নীতির কথা উল্লেখ করে তারা আরও বলেন, তাদের মেয়াদ বৃদ্ধির চিঠি অর্থবছরের শুরুতে জুলাই আগস্ট মাসে করার কথা। কিন্তু হিসাবরক্ষক মাহফুজ সেই চিঠি আটকে রেখে, অর্থবছরের শেষে জুন মাসে ঠিকাদারদের ডেকে টাকা দাবি করেন। তিনি অন্য একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে মোটা অংকের টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তাদেরকে কাজ দেয়ার পায়তারা করছে। সিভিল সার্জনের সাথে ঠিকাদারের করা চুক্তিপত্রে রয়েছে, পরবর্তী ঠিকাদার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত পুরনো কর্মচারীরা কাজ করবে।
এসময় সমাবেশ থেকে ৩ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। দাবিগুলো হলো, বকেয়া ১৩ মাসের বেতন দ্রুত প্রদান করতে হবে, তাদেরকে চাকরিতে বহাল রাখতে হবে এবং দুর্ণীতিবাজ হিসাবরক্ষক মাহফুজকে আগামী ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে স্থায়ীভাবে অপসারণ করতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ওয়ার্ডবয় আল আমিন, বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া তপু মল্লিক, কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডবয় মাহবুবুর রহমান, রানা বিশ্বাস ও গৗতম বিশ্বাস।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা: মাহফুজা খানম বলেন, আউটসোর্সিং কর্মচারীরাথানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কর্মরত ছিলেন। তাদের বেতন চাওয়াটা নায্য। বিষয়টি আমি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেছি।
এদিকে দুপুরে আন্দোলনরত আউটসোর্সিং কর্মচারিদেরকে দপ্তরে ডাকেন সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, ২৫-২৬ অর্থ বছরের টেন্ডার না হওয়া পর্যন্ত তাদের বেতনের দায়-দায়িত্ব আমি নেবো না। যদি টেন্ডার হয়, ২৪-২৫ অর্থ বছরে যারা কাজ করেছে তারাই যাতে কাজ পায় সেজন্য সুপারিশ করবো।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।