২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,সকাল ১০:১৮

খুলনায় শীতের আমেজ,রাতে কমছে তাপমাত্রা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২২

  • শেয়ার করুন

সকালে ঝলমলে মিঠে রোদ। ভরদুপুরেও সে রোদে তেজ নেই। আকাশে হালকা কুয়াশা। বাতাসে হিমের গুঞ্জন। সে গুঞ্জনে শীতের আগমনী গান। হেমন্তের সকালে আজ এভাবেই হামাগুড়ি দিয়েছে শীত। সব মিলিয়ে খুলনায় শীতের আমেজ অনুভূতি হচ্ছে।
অনেকেই শীতবস্ত্র রোদে শুকাতে দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার গায়েও চাপিয়েছেন।গতকাল খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

গ্রামাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিনই একটু একটু করে তাপমাত্রা কমছে। খুলনা শহরে এখনও সেভাবে শীত অনুভূত না হলেও সন্ধ্যার পর পর কমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। কমতে কমতে ভোরের দিকে সেই তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ২০.২ ডিগ্রিতেও নেমে যাচ্ছে। কারণ হাওয়া বদল। দক্ষিণের পরিবর্তে বইতে শুরু করেছে উত্তরের বাতাস। তবে এখনই এই আবহাওয়াকে শীতকাল বলা যাবে না। শীত জেঁকে বসার আগেই খুলনায় লেপ-তোষক তৈরির ধুম লেগেছে। শীত বরণে এ এক অন্য রকম প্রস্তুতি।নগরীর মোড়ে মোড়ে বসছে মৌসুমী পিঠার দোকান। এসব দোকানে মিলছে চিতই, ভাপা, কুলি, তেলে ভাজা পানপিঠাসহ নানা ধরনের পিঠাপুলি। ক্রেতাদের মধ্যে বেশি চাহিদা রয়েছে চালের গুড়োর সাথে গুড় ও নারিকেল মিশিয়ে তৈরি ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠার। ভোজনরসিকদের তৃপ্তি মেটানোর পাশাপাশি বিক্রেতাদের সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা। তবে পিঠা তৈরীর উপকরণের মূল্য বেড়ে যাওযায় আগের মত লাভ হচ্ছে না বলে জানান বিক্রেতারা।
বাংলা বর্ষপঞ্জিতে কার্তিকের পর অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ-মাঘ শীতকাল ধরা হলেও এবার কার্তিকের শেষের দিকে শীত আসতে শুরু করেছে।

উত্তর থেকে আসছে শিরশিরে বাতাস। সকাল-সন্ধ্যা ঘাসের ওপর মুক্তার মতো শিশির কনার দেখা মিলছে। ভোরের প্রকৃতিতে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব। যদিও দিনে গরমের তীব্রতা খুব একটা কমেনি। গ্রামের মেঠোপথে কোমল সূর্যের রশ্মিতে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু মুক্ত দানার মতো ঝলমল করছে। সে ঘাস অলঙ্কারিত করছে লাল-সাদা শিউলি ফুল। গাছের পাতা থেকে শিশির ঝরে পড়ার টুপটাপ শব্দ আর পাখিদের কলরব আন্দোলিত করছে গ্রামীণ জীবনযাত্রাকে।

সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা হঠাৎ কিছুটা কমে যেতে পারে। এতে শীতের অনুভূতি আরও তীব্রতর হতে পারে। এছাড়া দিনভর দেশের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সারা দেশে রাতে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। এতে শীতের অনুভূতি আরও স্পষ্ট হবে। এরই মধ্যে উত্তরাঞ্চলে হিমেল হাওয়া বইছে। এটা শীতের আগাম বার্তা। এ বছর আগেই শীত আসতে পারে।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণও হয়েছে। সে কারণে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে
পারে।
তিনি আরও জানান, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে শীত পড়েছে। ভোররাতে কুয়াশাও পড়ছে। তবে মধ্যাঞ্চল ও অন্যান্য অঞ্চলে শীত আসতে কিছুটা সময় লাগবে। দক্ষিণাঞ্চলে শীত পড়বে আরও পরে।

সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। পরবর্তী তিন দিনে আবহাওয়ার অবস্থা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

এদিকে, বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে খুলনার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ দশমিক ২, ঢাকায় ২১ দশমিক ১, রাজশাহীতে ১৯ দশমিক ৫, রংপুরে ২০ দশমিক ৮, ময়মনসিংহে ২০ দশমিক ৫, সিলেটে ২১ দশমিক ৭, চট্টগ্রামে ২৪ দশমিক ৪ এবং বরিশালে ১৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সীতাকুণ্ডে ৩৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন