প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২১
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন তার একজন চিকিৎসক। তবে সংক্রমণের পরিমাণ এখন পর্যন্ত খুব একটা বেশি নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ১১ এপ্রিল সাবেক প্রধানমন্ত্রীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ফুসফুসের পরিস্থিতি দেখতে বৃহস্পতিবার রাতে সিটি স্ক্যান করা হয়।
তাৎক্ষণিক রিপোর্ট পেয়ে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদেরকে বলেন, রিপোর্ট ভালো এসেছে। তবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে কী চিত্র।
শুক্রবার বিএনপি নেত্রীর একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, ফুসফুসে ৭ শতাংশ সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এই পরিমাণ সংক্রমণ কতটা আশঙ্কাজনক-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই নগণ্য, ভয়ের কিছু নয়।’
এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তিনি সুস্থ আছেন। করোনার উপসর্গ নেই কোনো। তবে যেহেতু এখন তার দ্বিতীয় সপ্তাহ চলে, আপনারা জানেন করোনা আক্রান্তদের জন্য এটি গুরত্বপূর্ণ সময়। তাই আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’
আগের দিন এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রিপোর্টের এখন পর্যন্ত যে ফাইন্ডিং পাওয়া গেছে এতে ম্যাডামের ফুসফুসের অবস্থা অত্যন্ত মিনিমাম।’
মিনিমাম বলতে কী বুঝিয়েছেন, তারও ব্যাখ্যা দেন এই চিকিৎসক। বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি এবং বুঝিয়ে বলেছি। অত্যন্ত মিনিমান। নেগলিজিবল এমাউন্ট। যেটাকে সত্যকার অর্থে মাইল্ড বলা যায়। মাইল্ড মর্ডারেট সিরিয়া এই একটা ক্যাটাগরি আছে। আগামীকাল ওনার পূর্ণাঙ্গ একটা রিপোর্ট দেবে তারপর বোঝা যাবে।’
নতুন ওষুধ যোগ
এভারকেয়ার হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করার পর তাৎক্ষণিক রিপোর্ট পেয়ে এ জেড এমন জাহিদ হোসেন জানান, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত পুত্রবধূ চিকিৎসক জোবাইদা রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করে চিকিৎসার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি জানান, সিটি স্ক্যানের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পর জোবাইদাসহ মেডিক্যাল টিমের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সেটি পর্যালোচনা করেছেন।
চিকিৎসায় কোনো পরিবর্তন এসেছে কি না জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের যে ওষুধপত্র সেখানে নতুন একটি ওষুধ যুক্ত করা হয়েছে। তবে আগের ওষুধ পরিবর্তন হয়নি, সেগুলো আগের মতোই চলবে।’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৭৬ বছর বয়সী নেত্রী আগে থেকেই নানা রোগে আক্রান্ত। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর সমস্যাসহ নানা সমস্যা আছে তার।
খালেদা জিয়া ছাড়াও তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ফাতেমাসহ গুলশানের বাসভবন ফিরোজার আরও আট জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসাও চলছে বিএনপি নেত্রীর জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শে।
বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি নেত্রী যখন হাসপাতালে যান পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য, তখন সেই গাড়ির সামনে ছিলেন ফাতেমাও, যিনি বিএনপি নেত্রী কারাগারে যাওয়ার পর তার সেবা করে আলোচনায় আসেন।