২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,রাত ২:৫৬

খালিশপুরে বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি কার্যালয়, নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২২

  • শেয়ার করুন

খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের বৈকালীতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে সমাবেশ করতে পারেনি স্থানীয় থানা বিএনপি। উল্টো সেখানে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দেওয়ায় পুলিশ সেখানে উভয়পক্ষকে কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় খালিশপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি কার্যালয়, নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
খালিশপুর থানার ৭, ১০, ১৫নম্বর ওয়ার্ড ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাস্তুহারা কলোনী ইউনিট অফিসে এসব ঘটনা ঘটে।

তবে সংঘাত-সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ কাজ করছে। রাত পৌঁনে ৯টা পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে এ ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।
ঘটনার সময় খালিশপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শনিবার (২৬আগস্ট) বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটেছে। এদিকে এই ঘটনার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদেরকে দায়ী করা হয়েছে।

রাতে নগর দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট শফিকুল আলম মনা। এ সময় তিনি দাবি করেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের সদস্যরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় খালিশপুরের প্রতিটি ওয়ার্ডে তাণ্ডব চালায়। তারা পরিকল্পিতভাবে গলিতে গলিতে, পাড়া মহল্লায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে ভাঙচুর করে। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সাথে ন্যাক্কারজনক আচরণ করে। যা আগে কখনো খুলনায় হয়নি। শাসকদলের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে ছাত্রলীগ- যুবলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় খালিশপুর থানা বিএনপির অফিসসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

তিনি আরও দাবি করেন, সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হোসেন হিল্টনের ও মহসিন কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক শিমুল এবং ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান রুবেলে বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে ভাঙচুর করে। ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির মিছিলে হামলা চালায়। ১২নং ওয়ার্ড বিএনপির মিছিল থেকে উজ্জ্বল নামে যুবদল কর্মীকে পুলিশ আটক করে। ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির মিছিলে হামলা চালিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ শামীম ও যুবদল কর্মী সুমন হাওলাদারকে কুপিয়ে এবং স্বেচ্ছাসেবক দল শহিদুলকে পিটিয়ে জখম করেছে। একই সাথে যুবদল কর্মী সাইফুল ও সাগরকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, চিত্রালী বাজারে তাণ্ডব চালিয়ে বিএনপি সমর্থিত ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানে লুটপাট করেছে। শাসকদলের ক্যাডাররা ৭, ১০, ১৫নং ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। বাস্তহারা ইউনিট বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও বোমা হামলা করেছে।

অপরদিকে খালিশপুর থানা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে এই হামলার জন্য বিএনপিকে দায়ী করা হয়েছে।

জানা যায়, নগরীর খালিশপুর থানা এলাকায় একই সময়ে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ সমাবেশ আহ্বান করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ দুই দলের সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু উভয় দলই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমাবেশ করার চেষ্টা করে।

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিকেলে বৈকালীর মোড়ে একই স্থানে একই সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মসুচী পালনের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। দুই পক্ষকেই বুঝিয়ে তাদের কর্মসুচী স্থগিত করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খালিশপুরে ঝটিকা মিছিল বের করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপির মিছিল পিপলস মোড়ে এলে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে তিন চার জন সামান্য আহত হয়েছেন বলেন তিনি জানান। এসময় একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয় বলে জানান ওসি।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন