প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২২
দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে হার মানলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে মারা গেছেন তিনি। রুবেলের পারিবারিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন রুবেল। তার মস্তিষ্কের টিউমারের চিকিৎসা হয়েছে দেশ ও দেশের বাইরে- ভারত ও সিঙ্গাপুরে। শুরুতে কিছুটা উন্নতি হলেও ধীরে ধীরে অবনতি হয়। গত বছরের শেষ দিকে শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে আবার ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ফেরার পর থেকে ক্রমাবনতি ঘটে তার। গত কিছুদিন ধরে একদমই খেতে পারছিলেন না। ফলে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় ১৪ মার্চ হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয় তাকে। এরপর অবস্থা কিছুটা ভালো হওয়ার পর বাসাতেও নিয়ে যাওয়া হয় একসময় স্পিন দিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ঘায়েল করা রুবেলকে।
তবে খুব বেশিদিন বাসায় থাকতে পারেননি। কয়েকদিনের মাথায় আবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ (মঙ্গলবার) বিকালে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। রুবেলের বন্ধু জাহিদুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, ‘মোশাররফ হোসেন রুবেল আজ বিকাল ৫টায় মারা গেছেন। বাসায়ই ছিলেন, শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।’
২০১৯ সালের মার্চে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে রুবেলের। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ নিউরো সার্জন এলভিন হংয়ের তত্ত্বাবধানে সফল অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। এরপর দেশে ফিরে এলেও কেমো এবং রেডিও থেরাপির জন্য নিয়মিত সিঙ্গাপুরে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকতে হয়েছে রুবেলকে। ওই বছরের ডিসেম্বরে সর্বশেষ কেমো দেওয়া হয়। এক বছর ফলোআপে ছিলেন তিনি।
এসবের মাঝেই ২০২০ সালে সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু নভেম্বরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় সবকিছু আবারও থমকে গেছে। ২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এমআরআই করার পর দেখা গেছে, পুরনো টিউমারটি আবার নতুন করে বাড়ছে। তারপর থেকে আবার শুরু হয়েছে কেমোথেরাপি। সব মিলিয়ে ২৪টি কেমোথেরাপি নিয়েছিলেন রুবেল।
২০০৮ সালে জাতীয় দলে অভিষেক মোশাররফ রুবেলের। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে খেলে ১ উইকেট পান। দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর তাকে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে নিয়েছিল দল। কোনও ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়ে আবার বাদ পড়েন। ২০১৬ সালে আফগানিস্তান সিরিজে তাকে দলে নেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। আট বছর পর জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নেমে ৩ উইকেট পান। দলকে জেতাতে বড় ভূমিকাও রাখেন।