প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২১
প্রকাশিত:
এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া, ভোমরা(সাতক্ষীরা): আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা এবং মহামারী করোনার সংক্রমিত প্রাদুর্ভাবে মৃত্যুর মিছিলের মধ্যেও চলছে ভোমরা স্থলবন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানী বাণিজ্যের মহোৎসব।শনিবার(১০ জুলাই ২০২১) বিকালে ০০০০৩২০১২১০১১০০৯ নং এলসিতে ক্যাপসিকাম আমদানীর বিপরীতে মিথ্যা ঘোষনায় আমদানী হয় মোবাইল সেট, ইজিলাইট(সিগারেট), অধিক দামী শাড়ি, থ্রি-পিস, ওড়না, লেডিস ব্যাগ, বেবী ব্যাগসহ বিভিন্ন প্রকার এলোপ্যাথিক ইনজেকশন ও ট্যাবলেট।জাতীয় রাজস্ববোর্ড কর্তৃক অঘোষিত পণ্য আমদানীর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাষ্টম্স সহকারী কমিশনারের নেতৃত্বে রাজস্ব কর্মকর্তা, ভোমরা শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের কর্মকর্তা এবং জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর যৌথ অভিযানে ভারত থেকে আসা (ডই-৪১উ৬৯৮৩) নং পণ্যবাহী ট্রাকটি আটক করে ভোমরা স্থলবন্দর পার্কিং ইয়ার্ডের সরকারী গোডাউন শেডে নিয়ে যায়। এখানে বন্দর সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাসহ সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আটককৃত ৮১ কার্টন পণ্য সরকারী গোডাউনে আনলোড করার পর প্রতি কার্টনে তল্লাশি চালানো হয়। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে তল্লাশি কার্যক্রম। এক পর্যায়ে তল্লাশি চলাকালে ৩১২ পিস বিভিন্ন প্রকারের দামী মোবাইল সেট, ১ লক্ষ বিশ হাজার স্টিক(৬ হাজার প্যাকেট) ইজিলাইট সিগারেট, ২৩৪ পিস সিনথেটিক শাড়ী, ৪৭ পিস থ্রি-পিস, ৬ পিস ওড়না, ৮ পিস লেডিস ব্যাগ, ১ পিস বেবী ব্যাগসহ ৬ কার্টন এলোপ্যাথিক (ইনজেকশন ও ট্যাবলেট) ঔষধ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। উদ্ধারকৃত ৩১২ পিস মোবাইল সেটের মধ্যে রেডমি নোট-১০ প্রো- ৭৭ পিস, যার প্রতি পিস মোবাইলের মূল্য বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৮ হাজার টাকা হিসেবে মোট ১৩ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা। রেডমি নোট-১০ প্রোম্যাক্স-৭০ পিস, যার প্রতি পিস মোবাইলের মূল্য বাংলাদেশী মুদ্রায় ২২ হাজার টাকা হিসেবে মুল্যের পরিমান ১৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। রেডমি নোট-১০-৯০ পিস, যার প্রতি পিস মোবাইলের মূল্য বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৭ হাজার ২০০ টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান দাঁড়ায় ১৫ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। রেডমি নোট-৯-২০ পিস, যার প্রতি পিস মোবাইলের মূল্য বাংলাদেশী মুদ্রায় ১০ হাজার টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান দাঁড়ায় ২ লক্ষ টাকা। মোটরলা মোটো আরএজেডআর ৫ জি-১ পিস, যার মূল্য ৯০ হাজার টাকা। পোকো এক্স-৩ প্রো- মোবাইলের সংখ্যা ৩০ পিস, যার প্রতি পিসের মূল্য বাংলাদেশী মুদ্রায় ৩২ হাজার টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান দাঁড়ায় ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। পোকো এম-২ প্রো-২০ পিস, যার প্রতি পিস মোবাইলের মূল্য বাংলাদেশী মুদ্রায় দাঁড়ায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ভিভো এক্স-৬০ প্রো প্লাস-৪ পিস, যার প্রতি পিসের মূল্য বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭০ হাজার টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান দাঁড়ায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ৬ হাজার প্যাকেট ইজি লাইট সিগারেট, যার প্রতি প্যাকেটের(১৮ ইউএস ডলার) বাংলাদেশী মূল্য ১ হাজার ৪৪০ টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান দাঁড়ায় ৮৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। অধিক দামী শাড়ী-২৩৪ পিস, যার (আনুমানিক) প্রতি পিসের বাংলাদেশী মূল্য ১৫ হাজার টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান ৩৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। অধিক দামী থ্রিপিস-৪৭, যার প্রতি পিসের (আনুমানিক) বাংলাদেশী মূল্য ৫ হাজার টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান ২ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। দামী ওড়না-৬ পিস, যার (আনুমানিক) প্রতি পিসের বাংলাদেশী মূল্য ১ হাজার টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান ৬ হাজার টাকা। লেডিস ব্যাগ-৮ পিস, যার (আনুমানিক) বাংলাদেশী মূল্য ২ হাজার টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান ১৬ হাজার টাকা। বেবী ব্যাগ-১ পিস, যার (আনুমানিক) বাংলাদেশী মূল্য ২ হাজার টাকা। ঔষধ-৬ কার্টন, যার প্রতি কার্টনের (আনুমানিক) বাংলাদেশী মূল্য ১০ লক্ষ টাকা হিসেবে মূল্যের পরিমান ৬০ লক্ষ টাকা। উদ্ধারকৃত অবৈধ আমদানী পণ্যের সর্বমোট আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ২ কোটি ৫ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। উল্লেখিত পণ্যের মূল্য ইন্টারনেট সূত্র থেকে নেওয়া। এদিকে ভোমরা কাষ্টম্স এর সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান,অবৈধ জব্দকৃত পণ্য সকলের উপস্থিতিতে ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালকের (ডিডি) নিকট সিলগালা করে হেফাজতে রাখা আছে। এছাড়া আমদানীকারক বগুড়ার মেসার্স সিদ্ধার্ত এন্টারপ্রাইজ এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স মামুন ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে কাষ্টমসের আইন প্রক্রিয়া চলমান আছে। পণ্য আমদানীর ০০০০৩২০১২১০১১০০৯ নং এলসিতে বৈধ পণ্যের বিপরীতে ভারত থেকে অবৈধ পণ্য আমদানী করা হয় যার বিল অব এন্ট্রি নং ছিল -১৬৭৫৫। এদিকে মেসার্স মামুন ট্রেডার্সের ভাড়া করা লাইসেন্স পেপার নিয়ে বগুড়ার আমদানীকারক মেসার্স সিদ্ধার্ত এন্টারপ্রাইজের এলসি ঘোষিত ১৪০০ কেজি ক্যাপসিকাম আমদানীর অনুমতি থাকলেও আমদানী করা হয়েছে ১০৬০ কেজি।অবশিষ্ট ৩৪০ কেজি ক্যাপসিকামের পরিবর্তে অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থের লক্ষ্যে অঘোষিত পণ্য আমদানী করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করেন। মেসার্স মামুন ট্রেডার্সের পেপার ব্যবহার করে ভারত থেকে পণ্য আমদানীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী খালিদ হাসান শান্তর নির্দেশে তার অফিসের কর্মচারীরা কাষ্টমসে দাখিল করে।