প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২০
কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানের মা নাসিমা আক্তার কেঁদে কেঁদে সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন।
সোমবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাইলেন তিনি।
নাসিমা আক্তার বলেন, কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী ছিল আমার ছেলে। দেশকে নিয়ে অনেক ভাবতো। ছেলে আমাকে বলতো, আম্মি আমরা যদি দেশে ভালো কিছু রেখে যাই তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটা অনুসরণ করবে।
তিনি আরও বলেন, সিনহা সবসময় ক্রিয়েটিভ কাজ করতে চাইত, সবসময় সারপ্রাইজ দিতে চাইত কাজের মাধ্যমে। ও বলতো, আমি আমার মনের খোরাকের জন্য কাজ করি; যাতে মানুষ উপকৃত হয়। একটা ডকুমেন্টারি করছি এখনো বলার মতো কিছু হয়নি, যখন হবে তখন বলব।
নাসিমা আক্তার বলেন, সিনহা বলতো ভালো কাজ দিয়ে যদি মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারি, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে। আমি বলতাম, বাবা তুমি যে আর্মি থেকে চলে আসছো, সেখানে এতগুলো কোর্স তাহলে কেন করলে? এখন তোমার কত প্রমোশন হতো, ভালো অবস্থান হতো তোমার। সে বলতো মাম্মি, পাওয়ার! পাওয়ার কি? পাওয়ার আজ আছে কাল নেই, মানুষে হৃদয়ের মধ্যে থাকব, কাজ করব। আর কাজের কথা মুখে বলার মতো কিছু নয়।
ছেলে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান নাসিমা আক্তার বলেন, কাজের কথা মুখে বলতো না সে। আমি বুঝতাম সে কথায় বিশ্বাসী ছিল না, কাজে বিশ্বাসী ছিল। যেমন বিশ্ব ভ্রমণ করা নিয়ে সে বলতো, এটা তো স্বাভাবিক ঘটনা। এইটা নিয়ে কোনো পূর্ব পরিকল্পনা নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ সে জানাতে চাইতো না। সারপ্রাইজ দেবে। কিছু উপহার দেবে দেশকে। নেক্সট জেনারেশনের কথা অনেক ভাবতো। বলতো আমরা যদি কিছু ভালো রেখে যাই পৃথিবীতে। আম্মু এ দেশের সবাই কেবল নেগেটিভ জিনিস দেখে, এ দেশে কিচ্ছু হবে না। কেন? এ ধরনের চরিত্রের অধিকারী সে ছিল।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ।
দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া রাশেদ ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। ওই কাজেই তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত ও শিপ্রা।