২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,রাত ৩:০৯

উপকূলে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’: সতর্ক অবস্থানে খুলনা জেলা প্রশাসন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১

  • শেয়ার করুন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ নিম্নচাপের প্রভাবে ইতোমধ্যে ঢাকা, টাঙ্গাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা ও কুড়িগ্রামের কিছু স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে বা হতে চলেছে। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে দেশে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের মতে, রোববার রাতের দিকে ঘূর্ণিঝড় গুলাব দেশটির অন্ধ্র প্রদেশের উত্তরাঞ্চল এবং উড়িষ্যার দক্ষিণাঞ্চল অতিক্রম করবে। বর্তমানে এটি উত্তর-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অতি-গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় এই অতি গভীর নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।

এদিকে গভীর নিম্নচাপের কারণে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলেছে।
বর্তমানে গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম থেকে ৪৮০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৪১৫ কিলোমিটার এবং ভারতের উড়িষ্যা উপকূল থেকে ৫১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

উপকূলে ঘূর্ণিঝড় গুলাবের তাণ্ডব মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই খুলনা জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিভিন্ন উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। জেলা প্রশাসন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, খুলনার উপকূলে যেকোনও ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবকরা সতর্ক অবস্থায় থাকেন। খুলনা সব সময় দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। এ কারণে খুলনা জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সব সময়ই থাকে। সতর্কতায় কোনও ঘাটতি নেই। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সক্রিয় অবস্থায় রাখা হয়। স্বেচ্ছাসেবকরা এগুলো সার্বক্ষণিক দেখভাল করে থাকেন। গভীর নিম্নচাপ গুলাব এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। জেলা প্রশাসন থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং ডেকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ৩৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে– সরকারি (সাধারণ) ২৫০টি, সরকারি (মাল্টিপারপাস) ২৪টি, বেসরকারি ৭৫টি। এ সব আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে দাকোপ উপজেলায় ৮৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৬২ হাজার ২৫০ জন, বটিয়াঘাটা উপজেলায় সাতাশটি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৫ হাজার জন, পাইকগাছা উপজেলায় ৩২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৬ হাজার ২৫০ জন, কয়রা উপজেলায় ১২১টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৮৭ হাজার, ডুমুরিয়া উপজেলায় ২৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১২ হাজার ৭৫০ জন, রূপসা উপজেলায় ২৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২০ হাজার ৩০০ জন এবং তেরখাদা উপজেলায় ২২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৪০০ জন অবস্থান নিতে পারবে। এ সব উপজেলার মধ্যে দাকোপে এক হাজার ৩৬৫ জন এবং কয়রায় এক হাজার ৯৫ জন স্বেচ্ছাসেবক সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন। আরও এক হাজার ১০০ স্বেচ্ছাসেবক তৎপর রয়েছেন।

শনিবার বেলা ২টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় তৈরি গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বর্তমানে এটি উত্তর মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর নাগাদ ভারতের মধ্যে উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। মধ্য বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল হতে চলেছে। এ সময় সাগর ভ্রমণে যাওয়া একেবারে নিরাপদ নয়। তাই সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন