২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,রাত ৩:৪০

আটকের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ভিপি নুরকে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০

  • শেয়ার করুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে আটকের ঘণ্টা দেড়েক পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তবে এর পরই তাঁকে ডিবি প্রহরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের একটি বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে নুরসহ তাঁর ছয় সহযোগীকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে রাজধানীর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ থানায় মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। এই মামলার প্রতিবাদেই সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

রাত ৯টার দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে নুরদের আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আধা ঘণ্টা আগে ভিপি নুরসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অন্যদের কথা বলতে পারছি না। পরে হয়তো জানাতে পারব।’

এরপর রাত ১০টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে ভিপি নুর ও তাঁর সহযোগীদের ছেড়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়।

আজ বিকেলেই নুরের বিরুদ্ধে মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ৭ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা হলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ১. হাসান আলম মামুন, ২. নাজমুল হাসান সোহাগ, ৩. মো. নুরুল হক, ৪. মো. সাইফুল ইসলাম, ৫. মো. নাজমুল হুদা, ৬. মো আব্দুল্লাহ হিল বাকি।

তবে ভিপি নুরুল হক নুরের দাবি, ‘আমরা যেহেতু সরকারের বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলি, তাই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটা করা হয়েছে।’

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘আসামি হাসান আলম মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সপ্তম ব্যাচের ছাত্র। তিনি আমার ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সুবাধে আমার সঙ্গে পরিচয় হয়।’

‘২০১৮ সালের ২৯ জুলাই আসামি আমার বিভাগের সিনিয়র হওয়ায় তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্পর্কের একপর্যায়ে আসামির সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর ধারাবাহিকতায় আসামির সঙ্গে আমার বিভিন্ন সময়ে ম্যাসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কথোপকথন হয়। সেখানে আসামি আমাকে শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আসামি গত ৩ জানুয়ারি অনুমান দুপুর ২টায় তার বাসা নবাবগঞ্জ বড় মসজিদে যেতে বলে এবং আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার বাসায় ধর্ষণ করে।’

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ‘ঘটনার পর গত ৪ জানুয়ারি আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। ১২ জানুয়ারি আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মামুনের বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় আমি ক্যাম্পাস রিপোর্টারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে মামুন ও সোহাগ তা হতে দেয়নি। এর আগে মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে রাজি হয়, কিন্তু আমি অসুস্থ হওয়ার পর সে নানা টালবাহানা শুরু করে।’

‘এরপর উপায়ান্তর না দেখে গত ২০ জুন বিষয়টি ভিপি নুরকে মৌখিকভাবে জানাই। সে বলে, মামুন আমার পরিষদের, আমার সহযোদ্ধা। তার সঙ্গে বসে একটা সুব্যবস্থা করে দেব। এরপর ২৪ জুন মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে তিনি আমার সঙ্গে নীলক্ষেতে দেখা করতে আসেন। কিন্তু মীমাংসার বিষয়টি এড়িয়ে আমাকে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। আমি যদি বাড়াবাড়ি করি তাহলে তার ভক্তদের দিয়ে ফেসবুকে আমার নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট করাবে এবং আমাকে পতিতা বলে প্রচার করবে বলে হুমকি দেয়। তাদের ছাত্র অধিকার পরিষদের ১.১ মিলিয়ন সদস্যের গ্রুপে এ প্রচারণার হুমকি দেওয়া হয়। নুর আরো জানায়, তার একটি লাইভে আমার সব সম্মান চলে যাবে। ইতোমধ্যে মামলার চার নম্বর আসামি সাইফুল ইসলাম আমার নামে কুৎসা রটিয়েছে এবং ৫ ও ৬ নম্বর আসামিকে লাগিয়ে দেয় কুৎসা রটাতে। তারা ম্যাসেঞ্জার চ্যাট গ্রুপে আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করাসহ সম্মিলিতভাবে চক্রান্ত করে।’

এজাহরে বাদী আরো বলেন, ‘ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা পর্যায়ের কয়েকজন বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতে চাইলেও আসামিরা তাদের ষড়যন্ত্রকারী বলে অ্যাখ্যা দেয়। এরপর আমি শারীরিক-মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় এবং আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে মামলা করায়; মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।’

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন