প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৩
মোংলা প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোংলার সরকারী খাল দখলমুক্ত, চলমান জলবদ্ধতা, দীর্ঘকালের সুপেয় পানির সংকট নিরসন ও সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধের দাবী জানিয়েছেন মোংলাবাসী। বৃহস্পতিবার (১০ আগষ্ট) মোংলাবাসীর সাথে বাগেরহাটের নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভায় এসব দাবী তুলে ধরেন সভার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বক্তারা। মোংলা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এদিন বিকেলে উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাটের নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শাহীন, মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মুশফিকুর রহমান তুষার ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন। সভায় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, শিক্ষক, এনজিও কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, মোংলায় শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রয়েছে, ফলে স্থানীয়ভাবে এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভাল। তবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তী রয়েছে। বিশেষ করে দুর্ভোগ ও ভোগান্তীর কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, সরকারী খাল দখল করে রাখায় বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আসছে। আর পৌরসভা থেকে যে খাবার পানি সরবরাহ করা হয় তা চাহিদার তুলনায় ভীষণ অপ্রতুল।
এছাড়া এখানকার বিশাল জনগোষ্ঠীর চিংড়ি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের ফলে সেই বিষ মিশ্রিত পানি জোয়ার-ভাটায় এখানকার চিংড়ি ঘেরগুলোতে প্রবেশ করায় ঘের মাছ শুণ্য হয়ে পড়েছে। এতে ঘের মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অপরদিকে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তাই এসকল সমস্যা নিরসনে মতবিনিময় সভায় বক্তারা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পরে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন বলেন, মোংলাবাসীর সমস্যার মধ্যে অন্যতম সুপেয় পানির সংকট নিরসনে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলার পাশাপাশি পানির ট্যাংকিও কিভাবে সরবরাহ করা যায় তারজন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আর খাল দখলমুক্তের বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগ বন্ধে জেলেদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি ও নানা সহায়তার পাশাপাশি যথাযথ আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য অবশ্যই সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এগিয়ে এসে একসাথে কাজ করতে হবে বলে জানান তিনি।