প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২২
বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আজ শনিবার (৫ নভেম্বর)। দুপুর ২টায় নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
সমাবেশ ঘিরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বরিশাল নগরীসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল। সমাবেশের দুই দিন আগে থেকেই বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচল। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক ও নৌপথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সব শেষ আজ শনিবার ভোর থেকে বরিশালের খেয়া নৌকায় যাত্রী পারাপারও বন্ধ থাকবে। এর আগে গতকাল মধ্য রাতে বন্ধ করে দেয়া হয় ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস।
যে কারণে সারাদেশ থেকে এখন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে বিভাগীয় শহর বরিশাল। ফলে পথে পথে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে সমাবেশে অংশ নিতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছেন বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী। এ কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।
নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে গুলিতে দলের নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ দলীয় চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
গণসমাবেশ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশের প্রধান বক্তা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিশেষ অতিথি আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান। তারা শুক্রবার বিমানে বরিশালে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিণ বলেন, আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার থেকেই বরিশালে বাস, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। তবে সমাবেশে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা বরিশালে এসে জড়ো হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকালেই ভরে গেছে সমাবেশস্থল।
গতকাল শুক্রবার সকালে সরজমিনে নগরীর রূপাতলী, নথুল্লাবাদ বাস র্টামিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল ও খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল ছয়টার পর বরিশাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি এবং অন্য কোনো বিভাগ থেকে বরিশালেও আসেনি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অনেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। পরিবহন বন্ধ থাকায় মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও।
বরিশাল বাসস্ট্যান্ডে বাসের টিকেট কাউন্টারগুলো বন্ধ। স্ট্যান্ডে সব বাস সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া অভ্যন্তরীণ সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ায় যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। সকাল থেকে যাত্রীরা নদী বন্দরে এসে ফিরে যাচ্ছেন। এক ভুক্তভোগী বলেন, ডাক্তার দেখাতে বরিশালে এসেছিলেন বৃহস্পতিবার সকালে। রাত হয়ে যাওয়ায় আর ফিরতে পারিনি। আজ সকালে ঘাটে এসে দেখছি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। এখন বাধ্য হয়ে বরিশালের থাকতে হবে।
পরিবহন বন্ধের জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, গণসমাবেশের যেন মানুষ আসতে না পারে সেজন্য সরকার এমন কাজ করেছে। তবে সরকার সংশ্লিষ্টদের দাবি, এতে সরকারের কোনো হাত নেই।
বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, রাতে উদ্যানেই ঘুমান দূর থেকে আসা নেতাকর্মীরা। কারণ আবাসিক হোটেলগুলোতে পুলিশ অভিযানের নামে হয়রানি করা হচ্ছে।
সরকার আমাদের সমাবেশ ঠেকাতে চায়। তবে তাদের কোনো উদ্যোগই সফল হবে না। জনগণের জন্য আন্দোলনে সব বাধা অতিক্রম করে দুই দিন আগেই সমাবেশস্থলে হাজির হয়েছেন নেতাকর্মীরা। এখানেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ত্রিপল টানিয়ে। খাবারের জন্য রান্না করা হচ্ছে। নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলেই বৃহস্পতিবার থেকে নামাজ আদায় করেছেন এবং জুম্মার নামাজও আদায় করেছেন।