প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৩
ক্রীড়া ডেস্ক: গানের কথায় আছে, ‘সব পেলে নষ্ট জীবন।’ লিওনেল মেসির ক্ষেত্রে তা উল্টো, সব পেয়ে তৃপ্ত জীবন! বিশ্বকাপ জয় দিয়ে সম্ভব সবকিছু পেয়ে যাওয়ার পর ফুটবল থেকে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব-নিকাশ বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। সামনে ব্যালন দ’র জয়ের হাতছানি থাকলেও তার আগ্রহ নেই খুব একটা। ক্যারিয়ারের বাকি দিনগুলিতে কেবল ফুটবলের আনন্দে মজে থাকতে চান আর্জেন্টাইন রূপকথার নায়ক। পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মেসি। ফোর্ট লডারডেলে সংবাদ সম্মেলনে অনেকেরর অনেক কৌতূহল মেটান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলের মান, সম্ভাবনা ও এগিয়ে যাওয়া নিয়ে বলার পাশাপাশি এই মহাতারকা শোনান তার পূর্ণতার গল্প। কথা বলেন ক্যারিয়ারের এই পর্যায়, মায়ামিতে আসা এবং ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়েও। এবার মেসির ব্যালন দ’র জয়কে অনেকেই মনে করছেন স্রেফ সময়ের ব্যাপার। সাতবার এই স্বীকৃতি পেয়ে রেকর্ডটি এমনিতেই তার। এবার তা সমৃদ্ধ হতে পারে আরও। তবে তিনি নিজে এটা নিয়ে ভাবছেন না একদমই। “এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার কারণ এটা দারুণ এক স্বীকৃতি। ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলির একটি এটি। তবে আমি গুরুত্ব দেই না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দলীয় অর্জন। ক্যারিয়ারে সব দলীয় ট্রফি জয়ের সৌভাগ্য আমার হয়েছে। যেটা বাদ ছিল, সেই বিশ্বকাপ জয়ের পর এখন আর ট্রফি নিয়ে খুব একটা ভাবি না।” “বিশ্বকাপ জয়টাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এরপর কেবল সময়টা উপভোগ করছি। সত্যি বলতে, এটা (ব্যালন দ’র) নিয়ে একদমই ভাবছি না। যদি পেয়ে যাই, তাহলে অবশ্যই দারুণ। না পেলেও সমস্যা নেই। ক্যারিয়ারে যা কিছু চেয়েছি, যত লক্ষ্য ছিল, সব অর্জন করেছি। এখন নতুন ক্লাবে এসেছি, উপভোগ করতে চাই এবং তাদের জয়ে সহায়তা করতে চাই।” উপভোগের মজাটুকুর জন্যই ইউরোপিয়ান ফুটবল ছেড়ে ইন্টার মায়ামিকে বেছে নিয়েছেন বলে জানালেন মেসি। প্রত্যাশামতোই পরিবারের সঙ্গে দিনগুলি দারুণ আনন্দে কাটছে তার। “অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্তটি (মায়ামিতে আসা) নিয়েছি। আমরা অনেক ভেবেছি এবং গোটা পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি এখানে এসেছি যাতে ফুটবলের আনন্দটা উপভোগ করে যেতে পারি। আজীবন উপভোগই করেছি এবং অন্য কিছুর চেয়ে স্রেফ উপভোগের ভাবনা থেকেই নতুন ঠিকানা বেছে নিয়েছি।” “এখন বলতে পারি, আমি খুবই খুশি। সেটা শুধু মাঠের ফলাফলের কারণে নয়, আমার পরিবারের কারণেও, প্রতিটি দিন আমাদের যেভাবে কাটছেৃ। এই শহর আমরা উপভোগ করছি, সমর্থকদের ভালোবাসা প্রথম দিন থেকেই অসাধারণ। শুধু মায়ামিতেই নয়, গোটা যুক্তরাষ্ট্রেই। ডালাসে সফরকারী দল হিসেবে গিয়েছিলাম আমরা, সেখানেও আমাকে অবিশ্বাস্যভাবে স্বাগত জানিয়েছে। সবকিছুর জন্য আমি কৃতজ্ঞ।” দক্ষিণ ফ্লোরিডার আবহাওয়ায় অবশ্য একটু বিপাকে পড়েছিলেন মেসি। তবে সেটিও মানিয়ে নিয়েছেন দ্রুতই। “মাস খানেক ছুটি কানানোর পর এখানে আসি। হ্যাঁ, শুরুতে বেশ কঠিন ছিল। এত গরমে অনুশীলন করা, ম্যাচ খেলাৃ এই সময়টায় এখানে প্রচণ্ড গরম, আর্দ্রতা অনেক বেশি। কখনও কখনও তা ফুটেই ওঠে। তবে দ্রুতই মানিয়ে নিয়েছি। এখন ঠিকঠাক আছি।” পিএসজিতে দুই বছর সময়টা যে স্বস্তিময় ছিল না, নানা সময়েই তা বলেছেন মেসি। আরও একবার তিনি বললেন, বাধ্য হয়েই প্যারিসে পাড়ি জমিয়েছিলেন। “আমার পিএসজিতে যাওয়া কোনো পূর্ব পরিকল্পনা থেকে ছিল না, কাক্সিক্ষতও ছিল না। আমি কখনোই বার্সেলোনা ছাড়তে চাইনি।” সৌদি আরবের লিগে অনেক বেশি অর্থের হাতছানি মেসির সামনে ছিল বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল নানা সংবাদমাধ্যমে। সেখানে না যাওয়ার কারণটাও তুলে ধরলেন মেসি। “বার্সেলোনা থেকে প্যারিসে (পিএসজিতে) যাওয়ার পরিস্থিতিটা ছিল একটু জটিল। তবে এখানে আসাটা ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। সৌদিতে যেতে পারতাম, তবে ওই লিগকে এমএলএসের চেয়ে একটু বেশি কঠিন বলে মনে হয়েছে। এজন্য এখানে এসেছি।