২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,সকাল ৬:৪২

যেসব শর্তে টিকা পাবেন গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীরা

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১

  • শেয়ার করুন

তথ্য অনলাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের শর্তসাপেক্ষে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রবিবার (৮ আগস্ট) অধিদফতরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে। সবার ন্যায় গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের মধ্যেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে টিকাবিষয়ক জাতীয় কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
এই অবস্থায় গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী জনগোষ্ঠীকে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দেশনাসমূহ মেনে চলতে হবে।
গর্ভবতী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণ নির্দেশনাগুলো হলো:
১. গর্ভবতী নারীদেরকে সুরক্ষা ওয়েব পোর্টাল বা অ্যাপসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে শুধুমাত্র হাসপাতালবিশিষ্ট সরকারি টিকাদান কেন্দ্রে কোভিড-১৯ টিকা দিতে হবে।
২. টিকাকেন্দ্রের রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক কাউন্সেলিং সম্পন্ন সাপেক্ষে গর্ভবতী নারীকে টিকা দিতে হবে।
গর্ভবতী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে মানতে হবে যেসব শর্ত:
১. গর্ভবতী নারী টিকা নেওয়ার দিন অসুস্থ থাকলে তাকে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া যাবে না।
২. অনিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত গর্ভবতী নারীকে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া যাবে না।
৩. কোনো গর্ভবতী নারীর টিকা অ্যালার্জির পূর্ব ইতিহাস থাকলে তাঁকে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া যাবে না।
৪. কোনো গর্ভবতী নারী যদি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এইএফআই কেস হিসাবে শনাক্ত হন তবে তাঁকে ২য় ডোজ দেওয়া যাবে না।
৫. সম্মতিপত্রে টিকাগ্রহীতার আইনানুগ অভিভাবক ও কাউন্সেলিং চিকিৎসকের স্বাক্ষর ছাড়া টিকা দেওয়া যাবে না।
গর্ভবতী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং:
কোভিড-১৯ টিকা নিতে ইচ্ছুক গর্ভবতী নারীকে টিকা দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই নিচের তথ্যগুলো একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অবহিত করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় নারীদের কোভিড-১৯ সংক্রমণের আস্থা ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিতকরণ:
১. নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান জন্মদানের (অপরিণত নবজাতক) সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
২. নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়।
৩. বয়স্ক গর্ভবর্তী (৩৫ বছর), উচ্চ বিএমআই সম্পন্ন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত নারী গর্ভাবস্থায় (বিশেষ করে ১ম ও ২য় ট্রাইমেশার) কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে তা মারাত্মক রূপ নিতে পারে। এক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৪. সাধারণ নারীদের তুলনায় গর্ভবতী নারীদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা অনেক বেশি।
গর্ভবতী নারীকে কোভিড-১৯ টিকার সুফল সম্পর্কে অবহিতকরণ:
১. কোভিড-১৯ টিকা নিলে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ও এর ফলে সৃষ্ট জটিলতার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম।
২. গর্ভাবস্থায় কেজিড-১৯ টিকা নিলে কোভিভ-১৯ এর গর্ভজনিত ঝুঁকিসমূহের সম্ভাবনা কম।
গর্ভাবস্থায় কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব:
১. গর্ভবতী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার লাভ-ক্ষতি সংক্রান্ত তথা অপ্রতুল।
২. অন্য যে কোনো টিকার মতো কোভিড-১৯ টিকার ক্ষেত্রেও টিকা পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়া (এইএফআই) হতে পারে, যা অন্য নারীদের মতো গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
৩. দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই।
সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া:
এসব নির্দেশ সম্পন্ন করার পর সম্মতিপত্রে (সংযুক্ত) গর্ভবতী নারী ও কাউন্সেলরের (রেজিস্টার্ড চিকিৎসক) স্বাক্ষর নিয়ে টিকা দিতে হবে।
স্তন্যদানকারী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার পূর্বে করণীয়:
স্তন্যদানকারী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এক্ষেত্রে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মতোই বিদ্যমান নিয়মসমূহ অনুসরণ করে টিকা দিতে হবে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন