২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,দুপুর ১২:৪৬

মোংলায় ওএমএস’র চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

মোংলা প্রতিনিধি:

মোংলায় সরকারের খোলাবাজারে বিক্রির (ওএমএস) চাল বিতরণে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে ডিলারের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতায় বরাদ্দের সিংহভাগ চালই সে খোলাবাজার ও কালো বাজারে বিক্রি করে আসছেন। এতে সুবিধাবঞ্চিত হয়েছেন এলাকার কয়েক’শ সুবিধাভোগী।
উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার রাজিব মৃধার এই অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে হাতেনাতেই। ডিলার রাজিব নির্ধারিত ৩০কেজি চালের পরিমাণের চেয়ে কম দিয়েছেন। বুধবার (২৪এপ্রিল) দুপুরে সুন্দরবন ইউউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মাঝে এই চাল বিতরণে অনিয়ম করেন তিনি।
রাজিব মৃধা মোংলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম হোসেনের আপন ভাগ্নে। সেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি এই অনিয়ম করে আসছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীর অনেকেই জানিয়েছেন। একই সাথে চাল দেওয়ার সময় রাজিব তার মামা আওয়ালীগ নেতা ইব্রাহিম হোসেনের জন্য ভোটও চেয়েছেন। ইব্রাহিম হোসেন আসন্ন মোংলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এদিকে ওএমএস চাল বিতরণে অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না। জব্দ করেন ওজনে কম দেওয়া ১৫/২০ বস্তা সরকারি চাল। তবে এরমধ্যেই ডিলার রাজিব মৃধা গাঁ ঢাকা দেয়। ইউএনও নিশাত তামান্না এ সময় সাংবাদিকদের কাছে বলেন, এখানে সরকারের খোলাবাজারে ওএমএস চাল বিতরণে ওজনে কম দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ৩০কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ২৬/২৭ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। আর মানুষকে যে চটের বস্তায় চাল দেওয়ার কথা সেটাও ডিলার দেয়নি। অন্য প্লাষ্টিক বস্তায় এই চাল দিয়েছেন। চাল বিতরণে প্রতারণা, অনিয়ম এবং সরকারি চাল আত্মসাৎতের প্রমাণ পাওয়ায় ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া সরকারি চাল বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহিনুর রহমান উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ইউএনও নিশাত তামান্না।
এদিন সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রেজাউল করিম বলেন, কয়েক বছর ধরেই ডিলার রাজিব মৃধা এই অনিয়ম করে আসছেন। তাকে নিষেধ করা হলেও কারও কথা শোনেনা বুধবার অনিয়ম করে ১২জন অসহায় গরীবদের ৩০কেজি চালে ওজনে ২/৩ কেজি করে কম দিয়েছেন। এই চাল আবার গোপনে অন্যত্র বিক্রি করেন ডিলার রাজিব মৃধা।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী আব্দুল হাকিম মৃধা ও মোঃ মোস্তফা হাওলাদার বলেন, ডিলার রাজিব মৃধা ৩০ কেজি সরকারি বস্তার পরিবর্তে অন্য প্লাষ্টিক বস্তায় ২৬/২৭ কেজি করে চাল দিয়েছে। চাল দেওয়ার সময় আসছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার মামা মোংলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেনের জন্য চেয়ারম্যান পদে সুউচ্চ কন্ঠে ভোট চান তিনি।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সটকে পড়া ডিলার রাজিব মৃধার কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ওজনে ২০০/১০০ গ্রাম করে কম দেয়া হয়েছে, এরচেয়ে বেশি না। আর মামার পক্ষে ভোট চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন