২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,রাত ৮:০১

ভোমরা বন্দর জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখায় আদায়কৃত ঘুষের টাকা তিন ভাগে ভাগাভাগি

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২১

  • শেয়ার করুন

সীমান্ত ব্যুরোঃ
করোনাভাইরাস সংক্রমন হু-হু করে বাড়তে থাকায় শনিবার থেকে সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরসহ জেলায় ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও থেমে নেই ভোমরা জিরো পয়েন্ট কার্গো শাখায় অবাধ ঘুষ বাণিজ্য। প্রাণঘাতী করোনার মাহদূর্যোগপ্রবণ মূহুর্তে এ কার্গো শাখায় চলছে মহাসমারোহে ঘুষযুদ্ধ। সরকারের যাবতীয় নিয়মনীতি ও স্বাস্থ্যবিধী উপেক্ষা করে কার্গো শাখায় নেমে পড়েছে দূর্নীতিবাজ ঘুষখোর কাষ্টম্সের অসাধু সিপাহী আব্দুর রাজ্জাক, ভোমরা কাষ্টম্সের সহকারী কমিশনারের গাড়ীচালক (গ্রীজার) শাহ আলম, আকবর আলী, এম এল এস এস, জাকির, দানিয়েল, দালাল (এনজিও) বদরুল আলম সহ অন্যান্য ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা। ভোমরা কাষ্টম্স প্রশাসনের সুনাম সুখ্যাতি বিনষ্ট করতে প্রকাশ্য দিবালোকে মাঠে নেমেছে সিপাহী আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন যাবত অঘোষিতভাবে জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখায় ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের নিকট থেকে ঘুষ বাণিজ্যে মোটা অঙ্কের অর্থ লুঠে নিলেও কাষ্টম্সের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের টনক নড়েনি। এ ব্যাপারে স্থানীয় জেলা ও বিভাগীয় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এবং ভারত-বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও কাষ্টম্স কর্তৃপক্ষ জগদ্দল পাথর ভূমিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোমরা জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখা এখন ঘুষ বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। ঘুষ বাণিজ্যের দায়িত্বে সামনে রয়েছে প্রধান দূর্নীতিবাজ সিপাহী আব্দুর রাজ্জাক সহ সিন্ডিকেট গ্যাং। তবে পেছন থেকে সব কলকাঠি নাড়ছে সহকারী কমিশনারের গাড়ীচালক (গ্রীজার) শাহ আলম। সে খুলনায় বসে ভোমরা জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখার ঘুষ বাণিজ্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করছে। গ্রীজার শাহ আলম, সিপাহী আব্দুর রাজ্জাক ও আকবরের নেতৃত্বে সাপ্তাহিক ঘুষের টাকা বণ্টন করা হয় বলে কাষ্টম্সে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। অভিযোগ রয়েছে, কার্গো শাখা থেকে আদায়কৃত ঘুষের টাকার লভ্যাংশ হিসেবে ৪০ শতাংশ শাহ আলম ও আব্দুর রাজ্জাকের পকেটে চলে যায়। বাকী ঘুষের টাকা অন্যান্যদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে দেওয়া হয়। করোনার মহাসংক্রমণ দূর্যোগের মধ্যেও ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে তিনশত পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করছে। ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর থেকে ভোমরা বন্দরে প্রবেশকালে জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখায় ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের নিকট থেকে পণ্যবাহী ট্রাক প্রতি বাধ্যতামূলক ভারতীয় একশ রূপী আদায় করছে রাজ্জাক-শাহ আলম সিন্ডিকেট গ্যাং, এমন অভিযোগ একাধিক সূত্রের। সম্প্রতি কার্গো শাখায় কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসছে সাপ। বহু ভুক্তভোগীদের অভিযোগে বেরিয়ে আসছে আরো নতুন নতুন তথ্য। ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের নিকট থেকে আদায় করা ঘুষের অঙ্ক ভাগ বাটোয়ারা হয় তিন দপ্তরে । রাজ্জাক-শাহ আলম সিন্ডিকেটের পকেটে ৪০%, দালাল এনজিওদের পকেটে ৪০% এবং সি এন্ড এফ কর্মচারী এসোসিয়েশনের কথিত নেতার নেতৃত্বে ২০% ঘুষ বাণিজ্যের অর্থ ভাগাভাগি হয়ে যায়। এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতিদিন ভারতীয় গাড়ী প্রতি ৪০ টাকা উৎকোচ আদায়ে তিনশ গাড়ি থেকে ঘুষ গ্রহণের পরিমান দাঁড়ায় ১২ হাজার টাকা। সপ্তাহে এর পরিমান দাঁড়ায় ৭২ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে এই ঘুষের পরিমাণ হয় ২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা। এছাড়া দালাল এনজিওদের একই পরিমাণ আদায় হয় ঘুষের টাকা। এদিকে কথিত নেতার নেতৃত্বে আদায়কৃত ঘুষ বাণিজ্যের অর্থের পরিমাণ প্রতি মাসে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে ভোমরা শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেল কার্যালয়ের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত নই। তবে এ ব্যাপারে খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করারও আশ্বাস দেন তিনি।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন