প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২০
দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সেতুর ২ ও ৩ নম্বর পিলারের উপর ৩৬ তম স্প্যান যোগ করার মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর ৫ হাজার ৪০০মিটার। আর মাত্র ৫টি স্প্যান বসানো বাকি থাকলো।
৬ হাজার ১৫০ মিটারের সেতুতে স্প্যান বসবে ৪১টি। আর মাত্র ৫টি স্প্যানে ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান বাকি পদ্মাসেতুর।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৪২ মিনিটের দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে স্প্যানটি বসানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের।
এদিকে বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়ায় অবস্থিত কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে স্প্যানটি বহন করে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই রওনা দেয়। বেলা ১২টার দিকে কাঙ্ক্ষিত পিলারের কাছে পৌঁছে ৩ হাজার ৬০০ টন সক্ষমতার ক্রেনটি। নদী তীরবর্তী পথে কোথাও কোথাও পর্যাপ্ত গভীরতা না থাকায় বেশি সময় লেগেছে গন্তব্যে পৌঁছাতে। এরপর নোঙর সম্পন্ন করে ভাসমান ক্রেনটি পিলারের কাছেই অবস্থান করে। ওই দিন পর্যাপ্ত সময় না থাকায় আর স্প্যানটিকে পিলারের ওপর তোলা যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ সকাল ৮টায় স্প্যান বসানো শুরু হয়। স্প্যানটিকে পিলারের উচ্চতায় উঠিয়ে রাখা হয়। এটি করতে ২ ঘণ্টার কম সময় লেগেছে।
পদ্মাসেতুর মূল সেতুর প্রকৌশলী জানান, স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটি গতকাল নোঙর করে রাখা ছিল। এরপর দুই পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে পজিশনিং করা হয়। তারপর স্প্যানটিকে ক্রেনের সহায়তায় তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। রাখা হয় দুই পিলারের বেয়ারিং এর উপর। আর এসব কাজগুলো করতে হয়েছে সতর্কতার সঙ্গে। স্প্যান বসানোর আগে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ঠিকঠাক আছে কিনা নিশ্চিত করা হয়। এখন পাশের ৩-৪ নম্বর পিলারে স্থাপন করা স্প্যানের সঙ্গে ঝালাই করে দেওয়া হবে। যেটি করতে কয়েকদিন সময় লাগবে। স্প্যান বসানোর সময় আশপাশ দিয়ে যাতে কোনো নৌযান চলাচল না করে সেদিকে দৃষ্ট রাখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
পদ্মাসেতুতে বাকি থাকলো আর ৫টি স্প্যান বসানো। এগুলো- ১১ নভেম্বর পিলার ৯ ও ১০ নম্বরে ৩৭তম স্প্যান (২-সি), ১৬ নভেম্বর পিলার ১ ও ২ নম্বরে ৩৮তম স্প্যান (১-এ), ২৩ নভেম্বর পিলার ১০ ও ১১ নম্বরে ৩৯তম স্প্যান (২-ডি), ২ ডিসেম্বর পিলার ১১ ও ১২ নম্বরে ৪০তম স্প্যান (২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান (২-এফ) বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপর।
পদ্মাসেতুতে মোট ৪২টি পিলারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। সেতু দৈর্ঘ্য ৬, ১৫০ মিটার (৬.১৫ কিলোমিটার)। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।